আমার জীবনের একটা সত্যি ঘটনা আপনাদের বলি। বিশ্বাস করবেন তো? আমি কিন্তু একদম বানিয়ে বলছি না। বিশ্বাস করুন। শুধু পুরোন সেই স্মৃতিগুলো চোখে ভাসে আর ভাবি সত্যি কি হয়েছিল সেদিন।
বাবা মা আমার নাম রেখেছিল রেখা। ছোটবেলা থেকেই দেখতে খুব সুন্দরী ছিলাম। গায়ের রঙ ধবধবে ফর্সা। সাড়ে পাঁটফুট হাইট। এই নিয়ে বাবা বলত তোর জন্য তো একটা লম্বা পাত্র দেখতে হবে রে? খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেব? দেখি তোর জন্য কেমন বর পাওয়া যায়। আমি খালি হাঁসতাম আর সেই লগ্ন মূহূর্তের আশায় বসে থাকতাম। মনের মতন বর পেলে কার না খুশী ধরে। বিয়ে করে বরকে নিয়ে সুখে ঘর বাঁধব। আমার জীবনে রাজকুমারটা কে হবে সেই চিন্তায় মনটা ছটফট করত। ভাবতাম যারা প্রেম করে তাদের এমন হয় না। আমি তো প্রেম করিনি তাই আমার হচ্ছে। হাজার হোক বিয়েটাতো মানুষে একবারই করে। বাবা মাকে ছোটবেলা থেকে দেখিছি এত সুখী। তাহলে আমার বেলায় এমনটা হবে না কেন? ভগবান কে ডাকতাম। আমার কলেজের বন্ধুরা আমাকে ভরসা জোগাতো। বলত-দেখিস রেখা, তোর জীবনে সেরা বর জুটবে। তোকে সে সত্যিকারের ভালবাসবে। তোর জীবনের সব স্বপ্ন পূরণ হবে।
এতটা আশা আমিও করিনি। বিয়ে হোল যার সাথে সে আমার সত্যিকারের জীবন সাথি হয়ে এল। আমি ভালবাসাটা শুধু পেলাম না। ভালবাসাটা উপচে দিতে লাগলাম আমার এই ভালবাসার বরটাকে। ও আমাকে নিজের থেকেও বেশী ভালবাসত। কখনও কষ্ট দিত না আমাকে। আমি পারতাম না ওকে একটুর জন্যও গা ছাড়া করতে। কাজের চাপে ওকে মাঝে ২-৩ দিনের জন্য বাইরে যেতে হোত। ফিরে আসত যখন আমি পাগলের মতন হয়ে যেতাম। ঘন্টার পর ঘন্টা ওকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকতাম। ওর ঠোটে চুমু খেতাম। ওকে আদর করতাম। বিছানায় ওকে ভরিয়ে দিতাম নিজের শরীরে আবদ্ধ করে। ও আমাকে ভালবাসার আবেগে করত। দুটো শরীর একত্রিত হয়ে কতক্ষণ যে আমরা বারবার একে অন্যের মধ্যে হারিয়ে যেতাম বুঝতেই পারতাম না। যৌনতার সুখ দুজনেই উপভোগ করতাম। আমাকে মিলনের পূর্ন তৃপ্তি দিতে ও আপ্রাণ চেষ্টা করত। বিছানায় দুজনে দুজনকে সুখ দিতে আমরা যেন দারুন ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম।
প্রথম দুবছর আমরা কোন বাচ্চা চাই নি। অথচ দুজনে চুটিয়ে সেক্স করেছি। বাচ্চা এড়ানোর উপায় হিসেবে অনেক পথ অবলম্বন করেছি। কিন্তু সেক্সকে কোনদিন অবহেলা করিনি। মনে হয়েছে স্বামী স্ত্রীর আসল মিলন তো ঐখানেই। যৌনতা ছাড়া স্বামী স্ত্রীর বিবাহিত জীবনে ছেদ পড়তে বাধ্য। একমাত্র দুজনে দুজনকে পাওয়ার চাহিদাই বিবাহিত জীবনকে সঠিক ভাবে টিকিয়ে রাখতে পারে। আমাদের জীবনে এমন কোন বাধা কোনদিন আসেনি। ওকে যতটা ভালবাসা দিয়েছি আমি ও ততটাই সুদে আসলে ফেরত দিয়েছে আমাকে।
2
ও আমাকে দীপঙ্করের সাথে আলাপ করিয়েছিল একদিন। বলেছিল সত্যিকারের বন্ধু সবাই হয় না। লাখে কখনও একটা দুটো হয়। দুজনের বন্ধুত্বটা এতটাই গাঢ়, যে ওদের দেখে নাকি হিংসে করে সবাই। দীপঙ্করকে খুব করে বলেছিল আমাদের বিয়েতে আসতে। কিন্তু দীপঙ্কর ওর অফিসের চাপে আসতে পারে নি। ওকেও নাকি আমার স্বামীর মতন বাইরে বাইরে টুর করতে হয়। ঘরে সুন্দরী বউ আছে। অথচ বউ এর সঙ্গ দিতে পারে না। ব্যাচারা।
কি করি কি করি। একদিন বলেই ফেললাম। আপনার বউ এর সাথে আলাপ করান না একদিন। তাহলে আমার স্বামীকে নিয়ে আপনাদের ফ্ল্যাটে যাই। বেশ মজা হবে।
দীপঙ্কর আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকাচ্ছিল বারবার। আমার স্বামী আমাকে অবাক করে দীপঙ্করের জায়গাতেই বলল-ওর খুব কষ্ট হচ্ছে গো। একে অফিসের চাপ, তারউপর বাইরে বাইরে ঘোরা। এমনই কপাল কাজ করছে কলকাতায়। আর বউ রয়েছে সেই শিলিগুড়িতে। বিয়ের পর তিন চারের বেশী মুখই দেখতে পারে নি বউ এর। এ ছেলের জন্য আমাকেই কিছু করতে হবে।
অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম-আপনি বউ এর মুখ তিনচারের বেশী দেখেন নি? এত বড় কষ্টদায়ক ব্যাপার। বউ তো আপনার জন্য এবার হাপিয়ে মরবে। শিলিগুড়ি যান না?
শেষ কবে গেছেন?
-তিন মাস আগে।
-তাহলে তো অনেকদিনের গ্যাপ। ফোনে কথা হয়?
-তা হয়। মাঝে মাঝে।
-আপনার বউ বোর ফিল করে না। আপনার জন্য মন খারাপ হয় না তার? আমি তো আমার স্বামীকে দেখতে না পেলেই হাঁপিয়ে উঠি।
দীপঙ্কর মাথা নীচু করে জবাব দিচ্ছিল। বলছিল-তা তো হয়।
আমার স্বামী মাঝখান থেকে ফোড়ন কেটে বলল-ওর বউকে দেখতে খুব সুন্দর জানো তো। এই দীপু তোর মানিব্যাগে যে ফটোটা আছে বার করে দেখানা আমার বউকে।
দীপঙ্কর ওর পার্স থেকে একটা ছোট ফটো বের করে দেখাল। বাঃ মুখটা খুব সুন্দর। একদম চাঁদ পানার মতন। আপনার বউ এর জন্য আমারই কষ্ট হচ্ছে। আফসোস করছিলাম।
দীপঙ্কর এবার একটু অল্প হেঁসে জবাব দিল। -আপনার হ্যাজব্যান্ডকে এর জন্য একটা থ্যাঙ্ক ইউ দিন। ঐ তো আমাদের দুজনকে এবার আরো কাছে করে দিচ্ছে।
চোখটা ছোট করে আমার স্বামীর মুখের দিকে অবাক ভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, সেটা কেমন?
ও আমাকে গর্ব করে উত্তর দিল। All credit goes to your husband..
হেঁয়ালিটা বুঝতে পারিনি। শুনলাম যখন মনটা গর্বে ভরে উঠল। আমার স্বামী বলছে-ওর জন্য এখানেই একটা ফ্ল্যাট ঠিক করে দিলাম বুঝলে। এই একদম আমার বাড়ীর উল্টো দিকে। দীপঙ্কর বউকে নিয়ে পরশুই আমাদের এখানেই চলে আসবে। কাল ও শিলিগুড়ি যাচ্ছে বউ কে আনতে। তারপর দুইবন্ধু একসাথে। তোমারও গল্প করার একটা সাথী জুটে যাবে। একসাথে চারজনে মিলে ঘুরবো, বেড়াব আর ফুর্তী করব।
সেদিন কি হয়েছিল জানি না। শুধু এইটুকুই বুঝেছিলাম। আমার স্বামী হচ্ছে বউ এর ঠিক যোগ্যতম স্বামী। শুধু নিজের কথাই চিন্তা করে না। বন্ধু যাতে তার স্ত্রীকে নিয়ে সুখী হয় তার জন্য তার দরদ, আন্তরিকতা মনে রাখার মতন। আমি আমার স্বামীর জন্য Proud Feel করি। প্রার্থনা করি, সবার কপালে যেন ভগবান এমন স্বামীই জুটিয়ে দেন। দীপঙ্কর কিছুক্ষণ আর বসে থেকে তারপর চলে গেছিল। ওর চোখ মুখ দেখে বুঝেছিলাম আমার হাজব্যান্ডকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষাই খুঁজে পাচ্ছে না ও।
3
ওকে নিয়ে শুরুটা কিভাবে করব বুঝতে পারছিলাম না। প্রথমে ভাবলাম একটা চুমু খাব ওর গালে। তারপর ভাবলাম শুধু চুমু নয়। ওর ঠোটে ঠোটটা ধরে রাখব ততক্ষন, যতক্ষন না ওর ভাল লাগে। তারপর আবার ভাবলাম, স্বামীকে ভালবাসব এরজন্য আবার অত ভাবব কেন? ওকে নিয়ে আমি আমার খুশী মতন আদর করব। আদরটা সোহাগী আদর। স্ত্রী যেভাবে স্বামীকে সবকিছু উজাড় করে ভরিয়ে দেয় সেইভাবে। নিজেকে সমর্পন না করলে ঐ বা খুশী হবে কেন? হাজার হোক আমি তো ওর বিয়ে করা বউ। আর যাই হোক মনের মতন বর পাইনি বলে জীবনে তো কোনদিন আফসোস করতে হবে না। এই একটা কারনেই তো স্বামী-স্ত্রীর বিবাহিত জীবন সুখের হয়। বাবা মায়ের আদুরী মেয়ে তাদের ছেড়ে নতুন স্বামীর সাথে ঘর বাঁধতে আসে এমনি এমনি? ওকে ফুলশয্যার রাত থেকে দেখছি আজ অবধি সেই একই রকম। বিয়েটা একবছর হোল। কিন্তু এখনও যেন সদ্য ফোটা ফুল। এ ফুলে পচন কোনদিন ধরবে না। আমাদের বিবাহিত জীবন আজীবন সুখের হয়ে থাকবে। ঠিক অমর প্রেমের মতন। যে প্রেমের কোনদিন মৃত্যু হয় না।
চেয়ারে বসে একমনে ভেবে যাচ্ছিলাম। আর ভাললাগার মূহূর্তটাকে অনুভব করতে করতে মনটা খুশীতে ভরে উঠছিল।
আমার স্বামী কম্পুটারে বসে কাজ করছিল। ওকে পেছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। গলাটা দুহাতে জড়িয়ে ওর শরীরটা দোলাতে লাগলাম চেয়ারের উপরেই। ও কম্পুটারের মনিটরের দিকে মুখটা রেখেই আমাকে বলল-তুমি খুশী হয়েছ?
-ভীষন খুশী হয়েছি ভীষন।
ওকে আরো আবদ্ধ করতে ইচ্ছে করছিল। ওর মাথার উপর আমার গলা আর থুতনীটা রেখে ওকে ঐভাবেই জড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। মুখটা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে ওর ঠোটে চুমু খাওয়ার আগে ও বলল-আসলে বন্ধুর জন্য বন্ধু করবে না তো কে করবে বল? দীপঙ্কর ছেলেটা কিন্তু দারুন। ওকে তো আমি অনেকদিন ধরেই দেখছি। দেখ ও কিন্তু নিজে থেকে বলেনি আমায়। যখন বুঝলাম ব্যাচারা কষ্ট পাচ্ছে আমি নিজে থেকেই ওকে বললাম-এক কাজ কর না তুই আমার এখানেই বউ নিয়ে চলে আয়। আমি তোর জন্য একটা ভাড়াবাড়ীর ব্যাবস্থা করে দিচ্ছি। ঠিক করেছি কি না বল?
-একদম ঠিক করেছ। আমি এবার ওর ঠোটে চুমু খেলাম। চুমুটার সাথে আমার ভালবাসার শক্তি মেশানো ছিল। জিভটা যে কখন ওর ঠোটের স্বাদ নিতে নিতে ওর মুখের মধ্যে ঢুকে গেল টেরই পেলাম না। আমি আমার সমস্ত আনন্দটাই ওর ঠোটের মধ্যে উপচে দিতে চাইছিলাম। একটা আবেগ চলে এল মনে। ঠোটদুটোকে পাগলের মতন ওর ঠোটের সাথে মিলিয়ে দিয়ে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছিলাম না কিছুতেই।
এবার ওর সামনে এসে আমি ওর চোখের দিকে চাইলাম। মাথাটাকে দুহাতে ধরে ওর ঠোটটাকে কিছুক্ষণের জন্য মুক্তি দিলাম। আমার পরম স্বামীকে গর্বের স্বরে বললাম-এই জন্যই তো তুমি সবার থেকে আলাদা। আবার চুমু খাই তোমাকে।
কম্পুটারটাকে আর দেখতে পাচ্ছিল না ও। আমার শরীরটা তখন মনিটরটাকে আড়াল করেছে। চেয়ারের উপরই ওর দিকে মুখ করে ওর কোলের উপর চেপে বসলাম। এবার ওর শরীরের উপর শরীর ছেড়ে মন মাতানো চুমু খেতে লাগলাম ওকে।
ও হাঁসছিল। বলল-এই রেখা চেয়ার ছেড়ে পড়ে যাব। দাড়াও দাড়াও। একটু কাজ আছে ওটা সেরেনি।
-এখন কোন কাজ নয়। এখন এটা।
আমি ওর কানে আমার জিভটা রাখলাম। কানের লতিতে চুমু খেয়ে ছোট্ট করে চিমটির মতন কামড়ে দিলাম। আসতে আসতে ওর কানের কিনারায় জিভটা বোলাতে লাগলাম। নীচে থেকে উপর পর্যন্ত। কানের ভেতরে ছোট ছোট বৃন্তে আমার জিভটা বোলাতে লাগলাম। মনে হোল ওর যেন একটু উত্তেজনা আসছে এবার শরীরে।
বুকের ব্লাউজটা আসতে আসতে খুলতে লাগলাম। ও আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল। পাখীর মতন নরম বুকদুটো উন্মুক্ত করে ওর মুখটাকে চেপে ধরলাম আমার বুকের উপরে।
-আমাকে তুমি দুর্বল করে দিচ্ছ রেখা।
-দুর্বল নয়। দুর্বল নয়। আমি তোমাকে ভালবাসি গো। দেখ এখানে একটু মুখটাকে রেখে।
মুখটাকে রেখে চুপটি করে বসে থাক আমায় না ছেড়ে।
নিজের স্তনের বোঁটাদুটোকে ডুবিয়ে দিতে চাইছিলাম ওর ঠোটের ভেতরে। ওকে বোঁটাটাকে মুখে গ্রহন করতে দিলাম। ওর চুলে হাত বুলিয়ে ওকে চুষতেও আহবান করলাম। ও চুষছিল,জিভের লালায় ভিজিয়ে দিচ্ছিল আমার স্তনের বোঁটাদুটোকে। মনে হোল সারজীবন ও যেন আমাকে এমনি করেই পুলক জোগায় সারা শরীরে।
চেয়ার থেকে ওকে তুলে বিছানায় নিয়ে এলাম। একধাপ নিজেই এগিয়ে গিয়ে শায়ার দড়িতে হাত লাগিয়ে গিঁটটা খুলতে লাগলাম। একটু পরেই পায়ের কাছে শায়াটা স্তুপীকৃত হয়ে জমা পড়ল। শরীরের আবরণটাকে খোলস থেকে বের করতে পেরে আমি খুশী। ওর দিকে তাকিয়ে আছি। ও আমাকে দেখছে। আকাঙ্খার ইশারা। আমার মুখের হাসিটুকুর অর্থ বুঝে নিতে অসুবিধা হোল না ওর।
আমি ওর কামনার ধন।। যুগে যুগে যার ইন্ধন জুগিয়ে এসেছে নারীরা। স্বেচ্ছায় তার মূল্যবান বস্তুটি তুলে দিয়েছে তার প্রেমিকের নয়তো স্বামীর হাতে। সমর্পন করলাম। আমার সুরভিত উদ্যান। ও আমাকে শেষ রাত্রি অবধি করল। যেন ওস্তাদের মার। শুরু হলে শেষ হতেই চায় না।
৪
দীপঙ্কর আজ সকালেই চলে গেছে শিলিগুড়ি ওর বউকে আনতে। আমার স্বামী বলছিল-এই শোন না। ভাবছি প্রথম দিনটা ওদের আমাদের বাড়ীতেই খেতে বলি। -কি বল? এই প্রথম কলকাতায় বউকে নিয়ে আসছে। একসাথে দুজনে মিলে এলে যা আনন্দ হবে না। ওদেরও ভাল লাগবে। কি বল?
-একদম ঠিক বলেছ। আমিও তাই ভাবছিলাম। বউ নিয়ে আসছে। প্রথম কদিন আবার রান্নাবান্না কেন? তার থেকে এখানেই তো ভাল। একদম নিজের বাড়ীর মতন মনে করে। ওদের তুমি নেমতন্ন করে।
কাছে এসে আমার গালে একটা চুমু খেল ও। বলল–আমার বউটা না ঠিক আমার মতন।
-আর আমার বরটা?
ও হাঁসছিল। বলছিল-যেন দীপঙ্কর তোমার খুব প্রশংসা করে। বলে একদম খাঁটি বউ পেয়েছ তুমি। প্রকৃত ঘরনী। আজকালকার মেয়েরা তো সব উড়নচন্ডী। খালি পাখনা মেলে উড়ে বেড়াতে চায়। তুমি কত ভাগ্যবান।
আমিও হাঁসছিলাম। বউ এর প্রশংসা অন্যের মুখে। বললাম-কেন ওর নিজের বউ কি খারাপ? ছবিতে তো দেখলাম, মুখটা কি সুন্দর। একদম প্রকৃত ঘরনীর মতন।
-ঠিক বলেছ। একদম ঠিক। দীপঙ্কর ওর বউকে কত ভালবাসে। দেখতে পায় না বলে রোজ ফোন করে। একঘন্টা দুঘন্টা ফোন নিয়ে বসে থাকে। বুকের ভেতর গুমড়ে মরে। নতুন বিয়ে করেছে, বউকে কাছে পায় না এটা কি ঠিক? আমি হলে তো মরেই যেতাম।
-আর আমি বুঝি তখন খুব আনন্দ পেতাম? আমি মরে যেতাম না? যাকে মন দিয়েছি, শরীর দিয়েছি, ভালবাসা দিয়েছি। তাকে ছাড়া আমি বাঁচতাম? চিন্তাই করতে পারি না।
দুজনে যেন দুজনকে মুগ্ধ চোখে দেখছিলাম। একে অন্যকে ছেড়ে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি। ভালোবাসার শব্দটার এমনই মায়াজাল। যে বিশ্বাসে পতি পত্নী একই বন্ধনে আবদ্ধ থাকে চিরকাল। পৃথিবীর কোন শক্তি নেই যে তাকে আলাদা করবে। ভালবাসার এমনই গুন।
আমার ঠোটে চুমু খেয়ে ও বলল-তুমি দীপঙ্করের বউ এর কথা জিজ্ঞাসা করছিলে না? আমি যতদূর শুনেছি। ও নাকি খুব ভাল মেয়ে। ঠান্ডা স্বভাবের। দীপঙ্কর একদম সঠিক মেয়েকে বিয়ে করেছে। প্রার্থনা করি ওদের বিবাহিত জীবন আরো সুখময় হোক। কি বল? দীপঙ্করকে তো আর বউ এর কথা ভেবে কষ্ট করতে হবে না। ওতো কাল থেকেই কাছে কাছে পেয়ে যাচ্ছে বউকে। আর চিন্তা কি?
-তুমিই তো কাছে করে দিলে ওদের। এটার জন্য দেখলে না দীপঙ্কর তোমার উপর কত খুশী।
-সত্যি খুশী। ও আমায় বলেছে। তোর উপকারটা আমি চিরকাল মনে রাখব। আমাকে প্রচুর থ্যাঙ্কস জানিয়ে গেছে।
একটু পরে অফিসের কাজে বেরিয়ে গেল ও। যাওয়ার আগে বলে গেল আজ তোমার জন্যও একটা সারপ্রাইজ আছে। সন্ধেবেলা যখন ফিরব তখন বলব।
কি সেই সারপ্রাইজ? এটা ভাবতে ভাবতেই আমার সারাদিন কেটে গেল। আগ্রহ আর কৌতূহল নিয়ে সন্ধেবেলা আমি ওর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মনে হোল ও বোধহয় আমার জন্য কিছু কিনে আনছে, অফিস ফেরত।
কলিংবেলের শব্দ শুনে দরজা খুলে সামনে দেখি মিটকী মিটকী হাঁসছে আমার দিকে তাকিয়ে।
-কি হোল ভেতরে আসবে না?
-আমার সারপ্রাইজটা দেখবে না।
-কই কোথায়?
আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল কিছুটা দূরে। দেখি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছে একটা নীল রঙের নতুন মারুতী সুজুকী ফোরহূইলার। আমাকে চমকে দেওয়ার মতন সারপ্রাইজ।
-এটা তুমি কিনলে?
-হ্যাঁ। আমার রেখাকে দেওয়া আমার ভালবাসার উপহার।
আমি অবাক চোখে চেয়ে রইলাম ওর দিকে। ভাবতেই পারছিলাম না এতবড় সারপ্রাইজ অথচ ও কত সহজ ভাবে বলে গেল বেরোনোর টাইমে। ফিরে এসেছে একটা আস্ত গাড়ী নিয়ে। এও বোধহয় ওর মতন স্বামী বলেই সম্ভব।
আমাকে গাড়ীতে বসাল ও। ওর হাতে স্টিয়ারিং। বলল-চল কোথাও ঘুরে আসি। এই শহরটারই কাছে কোথাও। আজ আর ঘরে নয়। শুধু এই গাড়ীতে তুমি আর আমি। এবার তাহলে একটু সেজে নাও।
তাড়াতাড়ি সেজেগুজে আবার গাড়ীতে চড়ে বসলাম। খুশী আর আনন্দতে মনটা নেচে উঠেছে। জানলার কাঁচ দিয়ে কলকাতা শহরটাকে দেখছি। গাড়ী চলতে শুরু করেছে। এ যেন নতুন ভাবে দেখছি শহরটাকে। ঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ও বলল-কি দেখছ?
-কিছু না। ঐ ফুটপাত আর দোকানগুলো।
-আর?
-ভাবছি।
-কি?
-কাল থেকে ভাললাগা গুলো সব একটার পর একটা দিয়ে যাচ্ছ আমাকে। আমি কি দেব তাই ভেবে পাচ্ছি না।
ও আমাকে কাছে ডাকল। এই শোন না।
আমি কাছে গেলাম। গাড়ী চলা অবস্থায় ওর বুকে মুখ রাখলাম। ওর এক হাতে স্টিয়ারিং, আর এক হাতে আমাকে জড়িয়ে রেখেছে। আবেগে চোখে জল চলে এল। ও বলল-এই কি ভাবছ বল না?
-ভাবছি, এত ভালবাসছ আমাকে। আর এটা যদি কেউ ছিনিয়ে নেয় আমার হাত থেকে। ও হাঁসল। আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার মাথায় একটা চুমু খেল। বলল-দূর পাগলি। তাই আবার কখনও হয় নাকি?
আমি তখনও খুশীর আনন্দে কেঁদে যাচ্ছি। আর মনে মনে ভগবানকে ডাকছি। ভগবান তাই যেন হয়। কেউ যেন ওকে কেড়ে না নিতে পারে কোনদিন আমার কাছ থেকে। ভালবাসার বাঁধনে ও যেন এভাবেই আবদ্ধ থাকে চিরকাল। চিরজীবনের জন্য। ওকে ছাড়া এক মূহূর্তের জন্য বেঁচে থাকা? আমি কোনদিন ভাবতেই পারি না।
আমরা অনেকরাত অবধি গাড়ীতে ঘুরলাম। হোটেলে রাত্রিরে ডিনারটাও সারলাম। ফিরে এলাম দুজনে। শরীরি ভালবাসায় আরো কিছুক্ষন আনন্দ নিলাম, দুজনে দুজনের সঙ্গমসুখ উপভোগ করলাম। ওর বুকে মুখ রেখে ঘুমিয়েও পড়লাম। কিন্তু স্বপ্নের মধ্যে কেউ যেন আমার কানে কানে কি বলে গেল-
“ এই রেখা শুনছ। শুনছ। এই রেখা। আমি খুব চাপা স্বরে শুনতে পারছি। সে বলছে-তোমার স্বামীকে শেষ পর্যন্ত ভালবাসা দিয়ে ধরে রাখতে পারবে তো রেখা? এই রেখা এই রেখা তুমি পারবে তো? শুনছ।”
আমি ধরমড় করে বিছানার উপর উঠে বসলাম। ও ঘুমোচ্ছে অঘোরে। আমার মাথার উপরে ঘাম হচ্ছে। এক গ্লাস জল খেলাম ঢকঢক করে। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। স্বপ্নটা কি সত্যি হতে যাচ্ছে নাকি? এ মা এমন স্বপ্ন কেন আমি দেখলাম? কি হবে তাহলে? চিন্তায় আমার বাকী রাতটুকু ঘুমই হোল না আর।
৫
সকালবেলা ও ঘুম থেকে ওঠার পর ওর হাতে চায়ের কাপটা ধরিয়ে ওকে বললাম-জানো কাল রাতে কি একটা বাজে স্বপ্ন দেখেছি আমি।
-কি স্বপ্ন?
-কে যেন আমাকে বারবার বলছে। এই তোমার স্বামীকে ধরে রাখতে পারবে তো? পারবে তো? কি বাজে স্বপ্ন।
-স্বপ্ন আবার সত্যি হয় নাকি?
-কি জানি? তারপর তো আর ঘুমই হোল না আমার।
ও চা খাচ্ছিল। মজা করে আমাকেও বলল-আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি কয়েকদিন আগে।
-কি স্বপ্ন?
-আমাকেও একজন বলছে-তোমার বউকে ধরে রাখতে পারবে তো? পারবে তো?
- দূর তুমি খালি ফাজলামি মারো।
ও হাঁসছিল। বলল-এই শোন। এবার আমি বাজার যাব। ওরা আসছে। সন্ধেবেলাই আসতে বলব। রাত্রে ডিনারের নেমতন্ন। তুমি কিন্তু আজ একদম ফাটিয়ে রান্না করবে। আমি অফিস থেকেও ছুটী নিয়েছি। সারাদিন বাড়ীতেই থাকব।
আতিথেয়তার এমন তোড়জোড়। এ যেন আমার স্বামী বলেই সম্ভব। ও বাজারে গেল। প্রচুর বাজার করে বাড়ী ফিরল। আমি রান্নার পদ কি হবে তাই ঠিক করলাম। ছোটবেলায় মায়ের হাতে রান্না শিখেছি। সবাই বলে। এমন রান্না খেলে নাকি মুখে লেগে থাকে। দীপঙ্কর আর ওর বউ এর জন্যও যত্ন নিয়ে রান্না করলাম। ওরা প্রথমবার একসাথে আমার বাড়ীতে আসছে। আমার স্বামী সব ব্যাপারেই আমার যেমন প্রশংসা আর গুণগান করে সেটা প্রমান করার জন্য আমিও যেন বদ্ধপরিকর ছিলাম।
ঠিক তখন সন্ধে ছটা। দরজার কলিংবেলের উপর কারুর হাত পড়ল। ওটা বাজছে সুর করে। আমার স্বামীকে আমি বললাম-দেখ তো ওরা এসেছে বোধহয়।
দরজা খুলতেই দুজনে একসাথে ভেতরে ঢুকল। যেন আদর্শ মানানসই দুজন সুন্দরী স্বামী-স্ত্রী। আমরা অতিথি আপ্যায়ন শুরু করে দিলাম। মেয়েটার মুখের দিকে আমি তাকাচ্ছিলাম। ওর মুখশ্রী খুব সুন্দর। কিন্তু কথা খুব কম বলে মেয়েটা। বারবার আমার মুখের দিকে আর আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকাচ্ছিল। শোবার ঘরে ওকে আলাদা ভাবে ডেকে নিয়ে ওর থুতনীতে হাত রাখলাম।–তোমার নাম কি ভাই?
-দামিনী।
-বাবা। দীপঙ্করের সাথে দামিনী। দারুন মিলেছে তো। তা তুমি এবার খুশী তো? এবার আর স্বামী তোমার কাছছাড়া হবে না। কি বল।
জবাব দিল না আমার কথার। হয়তো লজ্জায়। কিন্তু ওর চোখে মুখে কি যেন একটা ফুটে উঠল। যে ভাষার অর্থ আমি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারলাম না।
রাত্রে খাবার টেবিলে আমি দীপঙ্করকে বললাম-কি ব্যাপার? সেই আসার পর থেকে দেখছি বউ এর সামনে কথাই বলছেন না। আপনারা দুজনেই চুপচাপ। আর আমরা একাই কথা বলে যাচ্ছি বকবক করে।
দীপঙ্কর মাংসের হাড় চিবোতে চিবোতে শুধু বলল-আপনার হাতের রান্না খুব চমৎকার। দারুন করেছেন। আমার বউকে এবার একটু শিখিয়ে দিন তো। ওকে তো এইজন্যই এখানে নিয়ে এসেছি। ওঃ এমন রান্না অনেকদিন খাইনি।
ওর বউ আড়চোখে দীপঙ্করের দিকে তাকাচ্ছিল। আমার স্বামীও তখন আঙুলে লেগে থাকা মাংসের ঝোলটা চেটেপুটে খাচ্ছে। আমি এবার দুজনের দিকে তাকিয়ে বললাম-আপনারা কাল থেকে এখানেই খাবেন দুজনে। এখন কয়েকদিন। রান্নাবান্নার ঝেমেলা আর ফ্ল্যাটে পোয়াতে হবে না। তার থেকে আমার এখানেই। একদিন দামিনীও রান্না করবে। আর আমরা সবাই আনন্দ করে খাব। কি বলুন।
কেউ কিছু না বললেও আমার স্বামী হঠাৎ বলে উঠল।–তাহলে হয়ে যাক একদিন। এই দীপঙ্কর। তোমার বউ এর হাতে রান্না আমরাও খেতে পারছি একদিন। কি বল।
দামিনী আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকালো। কি রকম একটু অন্যরকম। ঠিক বুঝতে পারলাম না ওভাবে তাকানোর মানেটাকে। এতক্ষণ বাদে ও শুধু বলে উঠল। কালকে আমাদের ফ্ল্যাটে আসুন আপনারা দুজনে। আমি আপনাদের চা করে খাওয়াব।
পরের দিন সকালে শরীরটা খুব খারাপ। বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারছি না। মেয়েদের এই একটা দিনই খুব যন্ত্রনাদায়ক। যখন পিরিয়োডের ব্যাথা ওঠে। মনটা খারাপ করে ওকে বললাম-মনে হচ্ছে তোমার বন্ধুর ফ্ল্যাটে আজ যেতে পারব না। ভীষন কষ্ট হচ্ছে।
-কি করব তাহলে? দীপঙ্করকে না বলে দিই।
-না না তুমি একা ঘুরে এস। ওর বউ নাহলে খারাপ ভাববে। আমি না হয় অন্য একদিন।
-ঠিক আছে ঠিক আছে। আমি এখন অফিসে যাচ্ছি। বিকেলে ফোন করব তোমাকে। তখন যদি তোমার ব্যাথাটা কমে যায়।
সারাটা দিন শুধু যন্ত্রনাতেই কুঁকড়ে গেলাম। ও আমাকে বিকেলে ফোন করল। কিন্তু আমি আর যেতে পারলাম না। সন্ধে থেকে রাত্রি পর্যন্ত ঐ একভাবেই বিছানায় কাটিয়ে দিলাম শুয়ে শুয়ে।
রাত্রি তখন বাজে নটা। ও এখনও দীপঙ্করের ফ্ল্যাট থেকে ঘরে ফেরেনি। জমিয়ে গল্প করছে মনে হয়। ভাবলাম মোবাইলে একটা ফোন করব কিনা? তারপর ভাবলাম। এইতো কাছেই ওদের ফ্ল্যাট। আসতে তো দুমিনিট। গল্প করছে করুক। আমি এভাবেই আরো কিছুক্ষণ শুয়ে কাটিয়ে দি।
জানিনা চোখটা বুজে এসেছিল কখন। দরজায় কলিংবেলের আওয়াজ শুনে কষ্ট করে উঠে গেলাম। দেখলাম ও দাড়িয়ে।
-ভেরী সরি রেখা। আমার দেরী হয়ে গেল। তুমি ঘুমিয়ে পড়েছিলে?
-হ্যাঁ তুমি গেছিলে?
-গেছিলাম। আর বোল না দীপঙ্করটা বাড়ী নেই। আমাদের যেতে বলে নিজেরই পাত্তা নেই।
-কেন?
-অফিসের কাজ পড়েছে। ওর ফিরতে নাকি রাত্রি হবে। বউটা একা ছিল। বলল-বৌদি আসেনি? তোমার কথা বললাম। আমাকে খুব যত্ন-আত্নি করল। চা করে খাওয়ালো। নিজের সন্মন্ধে অনেক কথা বলল। গল্প করতে করতে কখন যে সময় চলে যাচ্ছে খেয়ালই নেই। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম বারোটা বাজে। তাই চলে এলাম। তুমি একা রয়েছ।
-অ্যাঁ বারোটা? দীপঙ্কর এখনও ফেরেনি?
-না। ওর বউ একাই রয়েছে বাড়ীতে।
ওকে যেন সেদিন কেমন অন্য মুড এ দেখলাম। রাত্রে শোয়ার আগে বেশী কথা বলল না। একে শরীর খারাপ। মিলন ঘটানোর শক্তি নেই শরীরে। আশা করলাম একটা চুমু অন্তত পাব। সেটাও যখন পেলাম না। তখন পাশ ফিরে শুধু মনটা খারাপ করে শুয়ে রইলাম।
ভেতর থেকে কে যেন খোঁচা দিচ্ছিল বারবার। মনে মনে ভাবছিলাম দূর ছাই ঐ বাজে স্বপ্নটাকে কেন যে দেখতে গেলাম? তাহলে কি জীবনে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে এবার?
৬
দীপঙ্করের বউটা বেহায়া আছে তো? আমি নেই, দীপঙ্কর নেই অথচ এতঘন্টা আমার স্বামীর সাথে বসে বসে গেঁজিয়ে গেল। দূর ছাই কিসব উল্টোপাল্টা ভাবছি। একদিনেই আমার স্বামীটা এত খারাপ হয়ে গেল? আমি বোধহয় সন্দেহ প্রকাশটা একটু বেশী পরিমানে করছি। নিজের উপরই রাগ হচ্ছিল। ওতো আমাকে এত ভালবাসে। অকারণে এইভাবে কাউকে দোষ দেওয়াটা ঠিক নয়। আমি পরের দিন আবার যথারীতি স্বাভাবিক হলাম। পিরিয়োডের ব্যাথাটাও অনেকটা কমে গেছে। ওকে বললাম-এই আজ আমি যাব তোমার সাথে ওদের ফ্ল্যাটে।
আমাকে অবাক করে ও বলল-দীপঙ্কর ওর বউকে নিয়ে আজ একটু ঘুরতে বেরোবে। আমাকে সকালে ফোন করেছিল,তুমি তখন ঘুমিয়ে ছিলে। বলল-বউকে নিয়ে অন্য একদিন এস। আমার গাড়ীটা চেয়েছিল। আমি দিতে রাজী হয়েছি।
-তুমি আমাদের কথাও বললে না কেন? একসাথে যেতাম। আনন্দ হোত।
-তোমার শরীর খারাপ। তুমি যেতে পারবে কিনা তাই বলেনি। আর তাছাড়া বিয়ে করে বউকে নিয়ে এই প্রথম বেরোচ্ছে, আমি আর ওদের আনন্দতে ব্যাঘাত ঘটাতে চাইনি।
-ঠিক আছে যাক। তুমি আজ তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরো কিন্তু। একসাথে দুজনে মিলে গল্প করব।
ও কাজে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার আগে ওর কাছে ঠোটের চুমুটা আবদার করে চাইতে হোল। ও আমাকে চুমু দিল। কিন্তু সেই পুরোন ভালবাসার মিষ্টি স্বাদটা কিন্তু চুমুর মধ্যে মেশানো ছিল না।
সারাটা দিন এরপরে বাড়ীতে একা একা কাটিয়ে দিলাম। সন্ধে তখন সবে উত্তীর্ণ হয়েছে। ভাবছি ও কখন ফিরবে। ছটা থেকে সাতটা, আটটা নটাও যখন বেজে গেল, মনটা ভীষন চঞ্চল হয়ে উঠল। মোবাইল নিয়ে ওকে ধরার চেষ্টা করলাম। তিন চারবার রিং করলাম। দেখলাম মোবাইল সুইচ অফ। ভীষন একটা বিরক্তি আর হতাশার ভাব ফুটে উঠল আমার চোখে মুখে। এতকরে বললাম তাও তাড়াতাড়ি ফিরল না। যাকে নিয়ে দুবছরের কাছাকাছি ঘর করছি, তার হঠাৎ এমন পরিবর্তন? এর রহস্যটা কি?
আমার ভিতরটা রাগে ছটফট করছিল। ভাবছিলাম ও এলেই ওকে সব রাগ উপড়ে দি। একজন কেমন বউ নিয়ে ঘুরতে গেছে। আর আমি কিনা ঘরে বসে হাত কামড়াচ্ছি আঙুল কামড়াচ্ছি। রাত্রি এগারোটা বাজে আমার স্বামী এখনো ফেরেনি। এর থেকে খারাপের খারাপ আর কি আছে?
মাথায় বাজটা পড়ল একটু পরেই। মোবাইলে বেশ কিছুক্ষণ পরে দেখি একটা ফোন। আমি তাড়াতাড়ি রিসিভ করলাম। বললাম-হ্যালো কে বলছেন?
ও প্রান্ত থেকে গলা ভেসে এল। গলাটা দীপঙ্করের। বৌদি আমি দীপঙ্কর বলছি।
-হ্যাঁ বলুন।
-সর্বনাশ হয়ে গেছে।
-কি?
-আমি বলছি। মনটাকে একটু শক্ত করবেন। আমি খুব ভেঙে পড়েছি। জানি আপনিও পড়বেন। তাই সব এসে বলছি। এখন এটা যেন জানাজানি না হয়।
-কি হয়েছে বলবেন তো?
-দামিনীকে নিয়ে ও কোথায় চলে গেছে।
-কে?
-আপনার হাজব্যান্ড।
-কি যা তা বলছেন।
-সত্যি বলছি। আমাকে দামিনী ফোন করেছিল। বলল-তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্কের এখানেই শেষ। আমি চলে যাচ্ছি। আমাকে আর ধরার চেষ্টা কোর না। তুমি আমাকে খুঁজেও পাবে না আর।
-কিন্তু আমার হাজব্যান্ড?
-ঐ তো সাথে রয়েছে দামিনীর সঙ্গে। দামিনীকে নিয়ে ও পালিয়েছে।
টেলিফোনে কথা বলতে বলতে আমি কাঁপছি। -কিন্তু আপনার তো বউকে নিয়ে ঘুরতে বেরোনোর কথা?
-ঘুরতে? আমি কাল থেকে কলকাতায় নেই বৌদি। জামশেদপুরে এসেছি অফিসের কাজে। তারমধ্যেই ওরা দুজন এসব কান্ড করেছে।
টেলিফোনের লাইনটা তখনও দীপঙ্কর ছাড়েনি। আমি আসতে আসতে কথা বলার শক্তিটা হারিয়ে ফেলছি। হাত পা গুলো অবশ হয়ে যাচ্ছে। শরীরটা ক্রমশ পাথরের আকার ধারন করতে শুরু করেছে। মোবাইলটাকে একপাশে রেখে আমি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি মেঝের দিকে। চোখের কোনাটায় জল চিকচিক করছে। এক্ষুনি ওটা ঝরঝর করে ঝড়ে পড়বে। ভেতরটা পুরো ফেটে যাচ্ছে। নিজের মনকে সান্তনা দিতে পারছি না। খালি ভাবছি আমি তো এমনটা চাইনি। তাহলে কেন এমনটা হোল? এ আমার কি করলে তুমি ভগবান। এখন আমি কার কাছে যাব? কিভাবে বাঁচব বাকী জীবনটা। হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিলাম।
দীপঙ্কর ওদিক থেকে ফোনে তখনও চেঁচিয়ে যাচ্ছে। বৌদি দোহাই। রিকোয়েস্ট করছি দুম করে কিছু করে বসবেন না। আমি এখনি গাড়ী ধরছি কলকাতায় ফিরব বলে। আপনি নিজেকে একটু শক্ত করুন। আমাকে দেখুন তো? আমিও তো আপনারই জায়গায়। আমি আসছি। প্লীজ যতক্ষণ না ফিরছি। কিচ্ছু করবেন না। বোদি আপনি শুনছেন? বৌদি-
৭
শরীরটাকে পাথরের মতন করে কতক্ষণ বসে রইলুম জানি না। আমার তখন আর নড়াচড়া করার শক্তি নেই। বুঝতে পারছি জীবনে চরম একটা অঘটন ঘটে গেছে এবার। যা হয়েছে আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি কোনদিন। এমন নির্লজ্জ কারণ ঘটালো দীপঙ্করের বউটা। কাল যখন ওকে দেখেছিলাম এমনটা যে হবে তাতো বুঝিনি। কি এমন হোল যে একদিনেই আমার স্বামীটাকে কব্জা করে নিল। মেয়েটাকে দেখে তো এতটা খারাপ মনে হয় নি। তাহলে?
যে লোকটা আমাকে নিয়েও এত বিশ্বাসের সাথে ঘর করল তার একদিনেই এমন চরিত্র বদল? এ কি করে সম্ভব? আমার স্বামীর স্বভাবে তো কোনদিন দোষ চোখে পড়ে নি। তাহলে? কি করে?
মাথাটা বনবন করে ঘুরছে। মনে হচ্ছে পড়ে যাব এবার। চক্কর দিচ্ছে। কোনরকমে দেওয়াল ধরে ধরে বিছানার দিকে গেলাম। এখন একটা ঘুমের ওষুধ দরকার। আমি ঘুমোব। ভাল লাগছে না। জানি না কাল সকালে উঠে সূর্যের মুখ দেখতে পাব কিনা। তবুও আমি ঘুমোব। কারন আমার কিছুই ভাল লাগছে না।
দীপঙ্কর এলো সকালে। কলিংবেলটা বাজছিল আমি শুনতে পাইনি। ঘুমে অচৈতন্য। দীপঙ্কর বাইরে থেকে মুখেও ডাকছে। বৌদি দরজা খুলুন। কারন ও ভাবছে আমি আবার সত্যি সত্যি কিছু করে বসেছি কিনা। অনেক ডাকাডাকির পর বিছানা থেকে উঠে দরজা খুললাম। ও সারারাত বাসে চেপে এসেছে। চিন্তায় ঘুমোতে পারেনি। আমার দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু বলতে লাগল। আমি শুনছি কিন্তু আমার কথা বলার শক্তি নেই। কালকের ঘটনা যেন আমার শরীরের সব শক্তি কেড়ে নিয়েছে।
-কাল রাত্রে কিছু খেয়েছেন?
-না।
-আপনার শরীর ঠিক আছে তো?
-না ঠিক নেই।
-এখন কিছু খেয়ে নিন বোদি। আমি কচুরী টচুরী কিছু কিনে নিয়ে আসব? খাবেন?
-না না আমি খাব না। ভাল লাগছে না।
আমার আবার কান্না আসছে চোখে। দীপঙ্করের চোখে মুখে হতাশা। ও একনাগাড়ে বলে যাচ্ছে। আর আমার চোখ দিয়ে ফোটা ফোটা জল গড়িয়ে পড়ছে মাটিতে।
-কি যে হোল কিছুই বুঝতে পারলাম না। শিলিগুড়িতে আমার ফ্ল্যাটে ওকে আমি নিয়ে গেছিলাম। ওখানেই দামিনীর সাথে ওর প্রথম আলাপ। হয়তো এ ব্যাপারটা ও আপনাকে বলেনি। নিজেই বলল-তুই বউকে শুধু শুধু এখানে ফেলে রেখেছিস কেন। তার থেকে আমার ওখানে চলে আয়। আমি ফ্ল্যাট ঠিক করে দিচ্ছি তোদের জন্য। আমিও খুশী হলাম। দামিনীতো হলই। কিন্তু ওর মনে যে এই মতলব ছিল জানতাম না। দামিনী বরাবরই একটু অন্য টাইপের মেয়ে। প্রচন্ড জেদী। বাবার পয়সা আছে প্রচুর। আমাকে বলল-বিয়ে করে বউকে সময় দিতে পারো না। আমি কিন্তু এরকম করলে ডিভোর্স চাইব তোমার কাছে। দেখলাম সমস্যার সমাধান করার এটাই একমাত্র উপায়। আমি সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি। কলকাতায় আপনাদের এখানে চলে এলাম। এসেই যত বিপত্তি।
দীপঙ্কর চাইছিল থানায় গিয়ে একটা ডায়েরী করতে। ওকে মানা করলাম।–না না এসবের দরকার নেই। সাতকান হবে। সবাই ছি ছি করবে। আর যে চলেই গেল, তাকে ওভাবে ফিরিয়ে এনে লাভ কি?
আমার কান্না থামল না। দীপঙ্কর বলে যাচ্ছে। -আপনাদের তো আসার কথা ছিল আমার ফ্ল্যাটে। চায়ের নেমতন্ন। আপনি যেতে পারেন নি। হঠাৎই অফিস থেকে আরজেন্ট কল। আমাকে জামশেদপুর যেতে হবে। দামিনী দেখলাম প্রচন্ড অসুন্তুষ্ট। আমার উপরে রাগ যেন থামতেই চাইছে না। অনেক কষ্টে ওকে বুঝিয়ে বললাম-তুমি তো আছ। ওরা আসুক না। তোমার ভাল লাগবে। আমি বাইরে যাচ্ছি ওদের কাউকে বলছি না। তাহলে ওরা আসা ক্যানসেল করে দেবে। আমি চলে গেলাম। তারপরেই কি যে হয়ে গেল। ভাবতেই খারাপ লাগছে।
দীপঙ্করের কথা শুনে আমার হঠাৎ খেয়াল হোল, দীপঙ্কর যে জামশেদপুর গেছে, সেটা কিন্তু আমার স্বামী বেমালুম চেপে গেছে আমার কাছে। ও বলেছিল অফিসের কাজে গেছে। ফিরতে রাত্রি হবে। তাই নাকি দামিনীর সাথে একা একা বসে গল্প করেছে। আমি দীপঙ্করকেও বললাম সেই কথা। ও শুনল অবাকও হোল। কিন্তু দুজনের একটা চিন্তাই মাথায় বারবার ঘুরপাক খেতে লাগল। সেদিন কি এমন হয়েছিল যে দুজনে এমন ঘৃণ্য বেপোরোয়া সিদ্ধান্ত নিল। সন্ধেবেলা আমিও ছিলাম না। দীপঙ্করও ছিল না। তাহলে? কি এমন ঘটল যার জন্য পরের দিনই ওরা দুজনে মিলে পালিয়ে গেল একসাথে। এ প্রশ্নের উত্তর কারুর জানা আছে কি? উত্তরটা আমিও জানি না। দীপঙ্করও না।
৮
এমন একটা কেলেঙ্কারীতে প্রাণের মানুষটা জড়িয়ে পড়লে কষ্টতো হয়। আমারও হয়েছিল। জানিনা এই কলঙ্কের বোঝা সারাজীবন আমাকে বইতে হবে কিনা। কিন্তু পাপ ধোয়ার জন্য আমিই বা কি করতে পারি? মনে হচ্ছিল জীবনটা যেন এই পঁচিশ বছরেই থেমে গিয়েছে। আর টানতে পারছি না।
তিনদিন বাদে সেই দূঃসংবাদটা পেলাম। আমার ভেতরটা হূ হূ করে উঠল। হাজার হোক ও আমার স্বামী। আমারও তো মন বলে একটা কথা আছে। খবরটা এলো চিঠির মাধ্যমে। দীপঙ্কর আমার হাতে ধরাল চিঠিটা। বলল-ও চিঠিতে মানা করেছিল এটা আপনাকে দেখাতে। কিন্তু না দেখিয়ে আমিও পারলাম না। বলতে বলতে ওর চোখেও জল চলে এল।
-কিসের চিঠি?
দীপঙ্কর বলতে চাইছিল না। আমিই নিজেই দেখলাম খোলা খামের বাঁদিকে লেখা Mr. Prasenjeet Mitra expired today. একি? নিজের মৃত্যু সংবাদ নিজের চিঠিতে। অন্যায় ও করেছে তা বলে মৃত্যুসংবাদ। এটা কেন?
চোখ ফেটে জল আসছিল। চিঠিটা খুললাম। ঝাপসা চোখে ওর দীর্ঘ চিঠি পড়ার চেষ্টা করলাম। চিঠিটা আমাকে ও লেখেনি। লিখেছে দীপঙ্করকে।
প্রিয় দীপঙ্কর,
এই চিঠি লিখতেই যত সময়। তারপর এটা খামে বন্ধ করে স্পীডপোস্ট করব তোমায়। আর কয়েক ঘন্টা পরেই আমার মৃত্যু। তুমি যখন এই চিঠি পাবে তখন আমি ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছি।
একটাই অনুরোধ তোমার কাছে। এই চিঠির কথা রেখাকে বোল না। ও বড় ভালো মেয়ে। আমি কোনদিন ক্ষমা পাব না ওর কাছে। তাই এই চিঠি শুধু তোমাকেই লেখা। অনেক কষ্ট দিয়েছি, তোমাদের দুজনকেই। তাই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছি আজ। যে কলঙ্কের দাগ আমি আমার জীবনে লাগিয়েছি, তার পরিণতি এমন হবে এটাতো জানাই ছিল। কিন্তু সত্যি বলছি বিশ্বাস কর, এমনটা যে হোক আমি কিন্তু চাইনি। কি করে যে হয়ে গেল বুঝলাম না।
রেখাকে বিয়ে করে আমি তো সুখীই ছিলাম। তুমি নিজেও দেখেছ। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমাদের নিজেদের মধ্যে মনের কত মিল। তাহলে এমন কেন হোল? বলি তোমাকে সেই ঘটনাটা।
আমি যেদিন তোমার সাথে শিলিগুড়ি গেলাম। সেদিন তোমার বউই একপ্রকার জোড় করেছিল আমাকে। বলতে পারো হূমকী। তুমি যেই দোকানে গেছ, তোমার বউ আমাকে বলল-আপনি ওর বন্ধু বলে তাই আপনাকে বলছি। কিছু একটা ব্যবস্থা করুন। নইলে আমি কিন্তু ওকে ডিভোর্স দিয়ে দেব। কথাটা খারাপ লেগেছিল আমার। তাই তোমার কথা চিন্তা করেই আমি কলকাতায় তোমার বাসার ব্যাবস্থা করে দিই। আমি বুঝতে পেরেছিলাম তুমি তোমার বউকে যৌনতৃপ্তি দিতে পারো না।এতে তোমার কোন দোষ নেই। একসাথে থাকলে তখন আর কোন সমস্যা হবে না। তাই কলকাতায় ফিরেই ফ্ল্যাটটা ঠিক করলাম। আমি রেখাকেও জানিয়েছি সেকথা।
কিন্তু তোমার বউ আমার সাথে ছল করল। কিছু মনে কোর না দীপঙ্কর। বউটি তোমার মোটেই ভাল হয় নি। আমি কি রেখাকে অবাঞ্ছিতা, অনাহূতা আর উপেক্ষিতা করতে চেয়েছিলাম? অথচ তোমার বউই আমাকে শারিরীক সন্মন্ধে বাধ্য করল। এখন এই পোড়ামুখ নিয়ে আর কি করতে যাব ওর কাছে? তাই-
তুমি আমাকে সেদিন ফোনে জানাও নি যে তুমি নেই। তাহলে আমি হয়তো যেতাম না। রেখাও যখন যেতে পারল না। আমার একা যেতে এমনি ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু যাওয়ার পরই ও আমাকে নিয়ে বেহায়াপনাটা শুরু করল।
ঘরে ঢুকতেই প্রথমে ওর আসল চেহারাটা বুঝিনি। দেখলাম খুব সেজেছে। ঠোটে লাল লিপ্সটিক। ভালোই গল্প করছিল। তারপরই হঠাৎ বলে উঠল-আপনি এই জন্যই কি নিয়ে এলেন আমাকে?
আমি বললাম-কেন?
ও বলল-আপনার বন্ধু তো এখানে এসেই আমাকে ফেলে জামশেদপুরে পালাল। এই ব্যাপারে কি বলবেন?
আমি বললাম-ও এই? ওতো চলে আসবে ২-১ দিনেই।
হঠাৎ আমার দিকে ঝুকে তোমার বউ বলল-এই দুদিনে আমার চলবে কি করে?
আমি ঘাবড়ে গেলাম। বুঝলাম তোমার বউ এর খুব সেক্স। এরপর আমার গায়ে পড়ে ন্যাকার মতন বলল-আমাকে তুমি বলুন না। আমি তো বয়সে ছোট আপনার কাছে।
আমি বললাম-তোমার আপত্তি নেই তো?
ও বলল-না না আপত্তি কেন হবে? আমিও যদি তুমি বলি আপনাকে?
বুঝতে পারলাম, ব্যাপারটা শুধু তাড়াতাড়ি নয় একপ্রকার বাড়াবাড়ি হচ্ছে। এরপর তোমার স্ত্রী দামিনী চরম নির্লজ্জতার পরিচয় দিল।
আর কি বলব? ও খুব সহজেই ওর শরীরের মানচিত্রগুলো উদ্ভাসিত করে দিল আমার সামনে। দেখছি নিজের গায়ে জড়ানো শাড়ীটা খুলছে আমার সামনে। যেন কোন দ্বিধা নেই। লজ্জ্বা নেই। বেহায়ার মতন নিজেকে উন্মুক্ত করছে।
ওকে এভাবে শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করতে দেখে আমিও খুব বিরক্ত হয়ে উঠেছি। রেগে বললাম-এ কি করছ? তোমার লজ্জা নেই।
তোমার বউ আমাকে জবাবে বলল-ন্যাকামি কোর না। নিজের বউ যখন শাড়ী খোলে তখন তো কিছু বল না?
আমি তখন চোখের সামনে একি দৃশ্য দেখছি। এ বড় বিরক্তি কর। কি করব বুঝতে পারছি না। ঘাবড়ে যাচ্ছি আরো।
ও আমাকে আরো বিপদে ফেলে দিয়ে বলল-তোমাকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম, ভেতরে ভেতরে ভীষন ছটফট করেছিলাম। তুমি বোঝ না মেয়েরা কি চায়? এবার একটু জাগো তুমি। জাগতে পারছ না? আমি থাকতে পারছি না। আমাকে তৃপ্ত কর প্লীজ।
আমাকে তখন চুমু দেওয়ার জন্য লিপস্টিক চর্চিত ওষ্ঠদ্বয় বাড়িয়ে দিয়েছে তোমার স্ত্রী দামিনী।
আমি বললাম-না না একি করছ ছাড়ো আমাকে? এটা ঠিক নয়।
ও বলল-কি ঠিক নয়? এবার যেন ওর রুদ্র মূর্তি। লজ্জা করে না? এতদিন একজনের সাথে ঘর করে বন্ধুর স্ত্রীর সাথে গা ভাসিয়ে দিতে? আমি যদি চেঁচিয়ে এখন লোক ডাকি? বলি তুমি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসব করছ। আমাকে জোড় করে রেপ করছ তুমি।
বিশ্বাস কর আমার তখন মনে হচ্ছিল সজোড়ে একটা চড় মারি ওর গালে। তারপর যা হয় দেখা যাবে। কিন্তু কেন জানি না ও আমাকে দ্বিতীয়বারের জন্য আবার ছল করল আমার সাথে। আমাকে বলল-বিশ্বাস কর, আমি শুধু আজকের দিনটা চাইছি তোমার কাছে। আর কোনদিন বলব না। প্লীজ।
আমার ঠোটে তখন ও ঘনঘন চুমু খেয়ে চলেছে। আমি সেই দৃশ্য ভেতর থেকে মেনে নিতে পারছি না। শুধু ভাবছি, ক্ষনিকের অস্বস্তি। কিন্তু এটা থেকে যদি চিরকালের স্বস্তি পাওয়া যায় তাহলেই আমার মুক্তি।
আমার শরীরটা শামুকের মতন গুটিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ও তবু কসুর করছিল না আমাকে জাগিয়ে তুলতে। প্রাক সহবাসের সবরকম কলাকৌশল ও নিজেই প্রয়োগ করতে শুরু করল আমার সাথে। নিজের হাতে ও আমাকে বিবস্ত্র করতে শুরু করল। ওর কামক্ষুধার তাড়না দেখে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। আমি উলঙ্গ। ও নিজের জিভটা কয়েক মূহূর্তের জন্য নিজের ঠোটের উপর বুলিয়ে নিল। চকচকে ভিজে ভিজে ঠোটে যেন পৃথিবীর সমস্ত কামনা আগুনের মতন ঝলসে উঠছে।
বিশ্বাস কর দীপঙ্কর আমি কিন্তু এটা চাই নি। শুধু এটাই বুঝতে পারছিলাম। তিনমাসে যে সুখ তুমি তোমার বউকে দিতে পারো নি। সেটাই ও পুষিয়ে নিতে চাইছে আমার কাছ থেকে। ও আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকে পেটে চুমু খাচ্ছিল। আমি চেষ্টা করছিলাম নিজেকে নিশ্চল রাখার। ও বলপ্রয়োগে আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চাইছে। আমি চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব ওর কামনায় সাড়া না দেওয়ার। হঠাৎ অতর্কিত আক্রমণে ও আমাকে নীচে শুইয়ে দিল এবারে। আমি কি করব বুঝে না উঠতেই আমার বুকের উপর ভার রাখল দামিনী। যেন আমার ইচ্ছা আর অনিচ্ছার উপর আর নির্ভর করবে না ও। আমাকে চুমু দিয়ে রক্তবর্ণ করে দিচ্ছিল আমার ঠোটটাকে। উদাম হয়ে আমাকে নীচে শুইয়ে রেখে আমার দুদিকে পা ছড়িয়ে বসল দামিনী। প্রায় আধঘন্টা ধরে বিপরীত বিহারে তৃপ্ত করল নিজেকে।
আমার সঙ্গে অতক্ষণ ধরে যুদ্ধ করেও আঁশ মেটেনি তোমার বউয়ের। আমাকে ছাড়তেই চাইছিল না। নগ্ন শরীরটাকে আমার শরীরের সাথে লেপ্টে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকল বেশ কিছুক্ষণ। ও ঠোটের চুমু দিয়ে আমার ঠোটটাকে আঁকড়ে ধরছিল বারবার। আমি শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই রেহাই চাইলাম ওর কাছে। -এবার আমাকে ছাড়ো। ঘরে ফিরতে হবে আমাকে। ওর মুখে কেমন একটা শয়তানি হাসি। আমার সমস্ত চিন্তাধারাকে ঘেন্নার দিকে নিয়ে ফেলছিল। ওর প্রতি একটা বিদ্বেষ আসছিল। আমার অসহায় মূহূর্তটাকে কাজে লাগালো দামিনী। তবুও নিজেকে সংযত করে বললাম-আমি বুঝতে পারছি। তোমার ভিতরটা হাহা করছিল এতদিন। তাই বলে এটা তুমি করলে। তুমি দীপঙ্করের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে। কাজটা তুমি ঠিক করলে না দামিনী। আমার বন্ধুকে আমি ঠকালাম। নিজের বিবেকের কাছে কোনদিন উত্তর দিতে পারব?
দামিনীর যেন কোন হেলদোল নেই। ও আমাকে নির্লজ্জ্বের মতন বলল-এখনকার দিনে এসব চলে না। সবাই এখন যে যার মতন চলে। আমার স্বামী আমাকে করে না। ও কোথায় কি করে বেড়ায় আমি দেখতে যাই?
এবার আমি রেগে গিয়ে চড় মারলাম ওকে। কিন্তু আশ্বর্য আমার চড় খেয়ে ও কিন্তু রাগল না। বরং আমার কাছে এসে বলল আমাকে-আবার চড় মারো আমাকে। দেখ আমি কি করি?
রেগে গিয়ে বললাম-কি করবে আমাকে?
ও হঠাৎ আমার মুখটা ওর নগ্ন বুকে চেপে ধরল। এবার পাগলের মতন মুখ নীচু করে চুমু খেতে লাগল আমার কপালে গালে মুখে। বারবার একই কথা বলতে লাগল-আমি ভালবাসি তোমাকে। যাকে ভালবাসি তাকে কি করে আঘাত দিই। আমি তোমার চড় খেতে রাজী আছি। প্লীজ একটু আদর কর আমাকে।
তুমি নিশ্চই বুঝতে পারছো দীপঙ্কর। ঐ মূহূর্তে আমার অবস্থাটা কি রকম। একবার মনে হোল তোমার বউ নিশ্চই মানসিক রোগী। নইলে এরকম একটা কান্ড ঘটায় কি করে? আমাকে হতবাক করে দিয়ে ও এবার শেষ অস্ত্রটা ছাড়ল। আমাকে করুন স্বরে বলল-আমিই শুধু খারাপ? আর বাকীরা ভাল? সত্যি কথা বললাম, তোমার বিশ্বাস হোল না। বলতে বলতে ও ছল করে কাঁদতে শুরু করল আমার সামনে। আমি বললাম-কি হয়েছেটাকি বলবে তো?
দামিনী বলল-তুমি যদি বিশ্বাস না কর আমার কিছু করার নেই। আমি কারুর বিশ্বাস ভঙ্গ করিনি। করেছে তোমার বন্ধু আর তোমার বউ।
আমি চোখ বড় বড় করে বললাম-মানে?
ও বলল-না থাক আমি বলব না। তুমি বাড়ী যাও।
আমার তখন জেদ চেপে গেছে। ওকে বললাম-বলতেই হবে তোমাকে। কি হয়েছে বল?
ও বলল-বলছি না বাড়ী যাও।
এবার আমি ওর চুলের মুঠিটা চেপে ধরলাম। বল বলছি। আমাকে অন্ধকারে ফেল না। দামিনী আমার সমস্ত আশাটাকে চূর্ণ করে দিয়ে এবার বলল-আমি জানতাম না তুমি এটা জানো না। ওর সাথে তোমার বউ এর রোজ ফোনে কথা হয়। দীপঙ্কর তোমার বউকে ভালবাসে। আমি দেখেছি ওর ফোনে তোমার বউকে পাঠানো লাভ মেসেজ।
আমার ভেতরটা তখন শক্ত পাথরের মতন হয়ে যাচ্ছে। তীব্র চিৎকারে ওকে বললাম-কি বলছ তুমি? এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?
নিজের জামাকাপড়টা আবার গায়ে জড়াতে জড়াতে ও বলল-আমি তো আগেই বলেছি বিশ্বাস কোর না। আমার কিছু যায় আসে না।
বলতে পারো একপ্রকার বাজীমাত করল দামিনী। নিমেষের মধ্যে আমার চিন্তাধারাকে পুরো বিপরীত দিকে ঠেলে দিল ও। আমি এই প্রথম তোমাকে আর রেখাকে অবিশ্বাস করতে শুরু করলাম। ঘরে ফিরে এলাম তারপরে। সারারাত এপাশ ওপাশ করলাম। রেখার সাথে ভাল করে কথাই বলতে পারলাম না। বার বার একটা চিন্তাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। কারন আমার মনে তো তখন বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছে দামিনী।
আমি সারারাত ঘুমোতে পারলাম না। খুব ভোর রাত্রিতে বিছানা ছেড়ে গুটি গুটি পায়ে বেরিয়ে গেলাম ফ্ল্যাট ছেড়ে। রেখা টের পেল না। ও তখন ঘুমোচ্ছে। আমি বাইরে থেকে তালাটা আসতে করে লাগিয়ে বেরিয়ে গেলাম। যাতে আবার ফিরে এসে তালা খুলে ঢুকতে পারি। ভোর রাতে তোমার আর দামিনীর ফ্ল্যাটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। কেউ যেন আমাকে নিশিডাকের মতন টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি আসতে করে বাইরে থেকে ডাক দিলাম-দামিনী এই দামিনী। ও দরজাটা খুলল একটু পরে। আমি কথা বলতে পারছি না। আমার সামনে তখন নাইটি পড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে দামিনী। দরজাটা বন্ধ করেই আমাকে জড়িয়ে ধরল দামিনী। এবার ওর গভীর চুম্বন আঁকড়ে ধরল আমার ঠোটদুটোকে। পাগলের মতন আমার ঠোটদুটোকে চুষতে চুষতে বলল-বুঝতে পেরেছ আমাকে। আমি তোমাকে সত্যি বলেছি কিনা? আর কখনও রাগ করবে আমার উপর?
কি হোল জানি না। শুধু এইটুকু বুঝলাম। রেখা আর তোমার প্রতি অবিশ্বাস এবার প্রবলভাবে দামিনীর প্রতি আকৃষ্ট করেছে আমাকে। ওর চুম্বনে আমি গভীর ভাবে সাড়া দিতে লাগলাম।
দীপঙ্কর নিজের নির্বুদ্ধিতায় নিজেরই অবিশ্বাসে আমি কি যে করলাম আমি নিজেই জানি না। স্বয়ং ভগবানও আমাকে ক্ষমা করবেন না আমি জানি। আমি তোমাদেরও ক্ষমা কোনদিন পাব না এটাও জানি। দামিনী আমাকে বলল-চল আমরা পালিয়ে যাই এখান থেকে। ওকে বললাম-কোথায় যাবে?
ও বলল-তোমার গাড়ী আছে না? চল আমরা গাড়ী চড়ে কোথাও চলে যাই। ওকে বললাম-বেশ। কখন যাবে? ও বলল-কেন আজকেই। আমি রেডী হয়ে নিচ্ছি। তুমি অফিসের নাম করে বেরিয়ে এস। যেন আমাকে তখন নিজের মতন চালনা করতে শুরু করে দিয়েছে দামিনী। ও যা বলছে আমি তাতেই হ্যাঁ বলছি।
রেখাকে মিথ্যে কথা বলে আমি বেরিয়ে এলাম। ইস ওর জন্য সত্যি খারাপ লাগছে। দামিনী আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল। ওকে নিয়ে নিমেষে এলাকা ছেড়ে চলে গেলাম অনেক দূরে। জায়গাটা সুন্দর। এখন আমি এখানেই আছি। আর হয়তো কিছুক্ষণ। চারিদিকে সুন্দর গাছ গাছড়া। মাঝখানে একটা হোটেল। মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য। গত দুদিন ধরে আমি দামিনীকে এখানে প্রবল ভাবে ভোগ করেছি। ওর শরীরে নিজেকে আবদ্ধ করেছি একবার নয় বহূবার। নিজেকে বিলিয়ে দিতে আমার কাছে একটুর জন্যও কার্পণ্য করেনি ও। রাগে দূঃখে করেছি। হয়তো তোমাদের উপর প্রতিশোধ নিতে বারে বারে ওর শরীরের মধ্যে প্রবিষ্ট হয়েছি। আমার অবুঝ মন বারে বারে এই ভোগবাসনা চরিতার্থ করতে বাধ্য করেছে আমায়। তোমার সুরভিত উদ্যান আমি ছিড়ে খুড়ে খেয়েছি দীপঙ্কর। আমায় ক্ষমা কোরো। জানি আমি অন্যায় করেছি। সেইজন্যই নিজের রাগ আর ক্রোধকেও আমি চেপে রাখতে পারেনি। দামিনীকে আমি নিজের হাতে খুন করেছি। হ্যাঁ খুন। ওর অসাঢ় মৃতদেহটা এখন পড়ে আছে আমার সামনে। একটু আগে গলা টিপে ওকে আমি হত্যা করেছি। জানি তুমি জিজ্ঞেস করবে কেন? ঐ যে বললাম ছলনা করে আমার মনটাকে জয় করতে চেয়েছিল তোমার বউ। ভাবতেই পারেনি আমি ওকে খুন করব। বোকার মতন বলে ফেলেছিল আমাকে। ভেবেছিল আমি তো কোনদিন আর রেখার কাছে ফিরে যেতে পারব না তাই। মিথ্যেটাকে কেমন সত্যি করে বানিয়ে বানিয়ে বলেছিল ও। সেটাই রসিয়ে রসিয়ে বলছিল। আর হাঁসছিল, তোমাকে কেমন বোকা বানিয়েছি। এবার বল এটা না করলে আমাকে পেতে তুমি?
সত্যি বলছি দীপঙ্কর। আমার হাতদুটো তখনও ওর গলাটাকে ছাড়ছিল না। দামিনীর প্রাণটা তার আগেই বেরিয়ে গেছে। আমি যেন একবার নয় বার বার মারতে চাইছিলাম ওকে।
নিজেকে কোনদিন ক্ষমা করতে আর পারব না। একটু পরে পুলিশ আসবে। তার আগেই আমাকে যা করার করতে হবে। দূঃখের কথাটা একটাই। বেঁচে থাকার সব আকর্ষনই হারিয়ে গেল। আত্মহনন ছাড়া আমার এখন আর কোন গতি নেই। আমার মৃত্যুতে কেউ কষ্ট পাবে না ঠিকই। কিন্তু শান্তির পথ খুঁজতে এছাড়া আমার আর কোন গতি নেই। যাবার আগে একটা কথাই বলে যেতে চাই। পারলে রেখাকে একটু দেখ। এখন তুমি ছাড়া ওকে দেখার কেউ নেই। তোমরা আমাকে ক্ষমা করো। আমি একজন ভালো স্বামী হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম কোথায়? বিদায়। -ইতি তোমাদের মৃত প্রসেনজিত।
পুলিশ এসে একঘন্টা পরে ওদের দুজনের ডেডবডিটা হোটেল থেকে উদ্ধার করে। কলকাতায় কাটাছেড়ার পরে নিয়ে এসেছিল। আমি শেষ দেখাটা আর দেখিনি। কিন্তু সেদিনের সেই চিঠিটার কথা আমার আজও মনে পড়ে। দেখতে দেখতে ১টা বছর পেরিয়ে গেছে। আমি ওকে ভুলিনি। প্রসেনজিত এর শেষ ইচ্ছা পূরণ করেছে দীপঙ্কর। আমি এখন ওর ঘরনী। ঐ আমাকে দেখছে, ভালবাসছে। আমাকে নতুন ভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে দীপঙ্কর। আগেও যে চেয়েছিল তাকে দিতে কসুর করিনি। এখন যে চেয়েছে তাকে দিতেও কসুর করিনি। তফাতটা শুধু এই। মধ্যিখানে চাওয়ার মানুষটা শুধু বদলে গেছে। আমার সুরভিত উদ্যান সুরক্ষিতই আছে।
বাবা মা আমার নাম রেখেছিল রেখা। ছোটবেলা থেকেই দেখতে খুব সুন্দরী ছিলাম। গায়ের রঙ ধবধবে ফর্সা। সাড়ে পাঁটফুট হাইট। এই নিয়ে বাবা বলত তোর জন্য তো একটা লম্বা পাত্র দেখতে হবে রে? খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেব? দেখি তোর জন্য কেমন বর পাওয়া যায়। আমি খালি হাঁসতাম আর সেই লগ্ন মূহূর্তের আশায় বসে থাকতাম। মনের মতন বর পেলে কার না খুশী ধরে। বিয়ে করে বরকে নিয়ে সুখে ঘর বাঁধব। আমার জীবনে রাজকুমারটা কে হবে সেই চিন্তায় মনটা ছটফট করত। ভাবতাম যারা প্রেম করে তাদের এমন হয় না। আমি তো প্রেম করিনি তাই আমার হচ্ছে। হাজার হোক বিয়েটাতো মানুষে একবারই করে। বাবা মাকে ছোটবেলা থেকে দেখিছি এত সুখী। তাহলে আমার বেলায় এমনটা হবে না কেন? ভগবান কে ডাকতাম। আমার কলেজের বন্ধুরা আমাকে ভরসা জোগাতো। বলত-দেখিস রেখা, তোর জীবনে সেরা বর জুটবে। তোকে সে সত্যিকারের ভালবাসবে। তোর জীবনের সব স্বপ্ন পূরণ হবে।
এতটা আশা আমিও করিনি। বিয়ে হোল যার সাথে সে আমার সত্যিকারের জীবন সাথি হয়ে এল। আমি ভালবাসাটা শুধু পেলাম না। ভালবাসাটা উপচে দিতে লাগলাম আমার এই ভালবাসার বরটাকে। ও আমাকে নিজের থেকেও বেশী ভালবাসত। কখনও কষ্ট দিত না আমাকে। আমি পারতাম না ওকে একটুর জন্যও গা ছাড়া করতে। কাজের চাপে ওকে মাঝে ২-৩ দিনের জন্য বাইরে যেতে হোত। ফিরে আসত যখন আমি পাগলের মতন হয়ে যেতাম। ঘন্টার পর ঘন্টা ওকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকতাম। ওর ঠোটে চুমু খেতাম। ওকে আদর করতাম। বিছানায় ওকে ভরিয়ে দিতাম নিজের শরীরে আবদ্ধ করে। ও আমাকে ভালবাসার আবেগে করত। দুটো শরীর একত্রিত হয়ে কতক্ষণ যে আমরা বারবার একে অন্যের মধ্যে হারিয়ে যেতাম বুঝতেই পারতাম না। যৌনতার সুখ দুজনেই উপভোগ করতাম। আমাকে মিলনের পূর্ন তৃপ্তি দিতে ও আপ্রাণ চেষ্টা করত। বিছানায় দুজনে দুজনকে সুখ দিতে আমরা যেন দারুন ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম।
প্রথম দুবছর আমরা কোন বাচ্চা চাই নি। অথচ দুজনে চুটিয়ে সেক্স করেছি। বাচ্চা এড়ানোর উপায় হিসেবে অনেক পথ অবলম্বন করেছি। কিন্তু সেক্সকে কোনদিন অবহেলা করিনি। মনে হয়েছে স্বামী স্ত্রীর আসল মিলন তো ঐখানেই। যৌনতা ছাড়া স্বামী স্ত্রীর বিবাহিত জীবনে ছেদ পড়তে বাধ্য। একমাত্র দুজনে দুজনকে পাওয়ার চাহিদাই বিবাহিত জীবনকে সঠিক ভাবে টিকিয়ে রাখতে পারে। আমাদের জীবনে এমন কোন বাধা কোনদিন আসেনি। ওকে যতটা ভালবাসা দিয়েছি আমি ও ততটাই সুদে আসলে ফেরত দিয়েছে আমাকে।
2
ও আমাকে দীপঙ্করের সাথে আলাপ করিয়েছিল একদিন। বলেছিল সত্যিকারের বন্ধু সবাই হয় না। লাখে কখনও একটা দুটো হয়। দুজনের বন্ধুত্বটা এতটাই গাঢ়, যে ওদের দেখে নাকি হিংসে করে সবাই। দীপঙ্করকে খুব করে বলেছিল আমাদের বিয়েতে আসতে। কিন্তু দীপঙ্কর ওর অফিসের চাপে আসতে পারে নি। ওকেও নাকি আমার স্বামীর মতন বাইরে বাইরে টুর করতে হয়। ঘরে সুন্দরী বউ আছে। অথচ বউ এর সঙ্গ দিতে পারে না। ব্যাচারা।
কি করি কি করি। একদিন বলেই ফেললাম। আপনার বউ এর সাথে আলাপ করান না একদিন। তাহলে আমার স্বামীকে নিয়ে আপনাদের ফ্ল্যাটে যাই। বেশ মজা হবে।
দীপঙ্কর আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকাচ্ছিল বারবার। আমার স্বামী আমাকে অবাক করে দীপঙ্করের জায়গাতেই বলল-ওর খুব কষ্ট হচ্ছে গো। একে অফিসের চাপ, তারউপর বাইরে বাইরে ঘোরা। এমনই কপাল কাজ করছে কলকাতায়। আর বউ রয়েছে সেই শিলিগুড়িতে। বিয়ের পর তিন চারের বেশী মুখই দেখতে পারে নি বউ এর। এ ছেলের জন্য আমাকেই কিছু করতে হবে।
অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম-আপনি বউ এর মুখ তিনচারের বেশী দেখেন নি? এত বড় কষ্টদায়ক ব্যাপার। বউ তো আপনার জন্য এবার হাপিয়ে মরবে। শিলিগুড়ি যান না?
শেষ কবে গেছেন?
-তিন মাস আগে।
-তাহলে তো অনেকদিনের গ্যাপ। ফোনে কথা হয়?
-তা হয়। মাঝে মাঝে।
-আপনার বউ বোর ফিল করে না। আপনার জন্য মন খারাপ হয় না তার? আমি তো আমার স্বামীকে দেখতে না পেলেই হাঁপিয়ে উঠি।
দীপঙ্কর মাথা নীচু করে জবাব দিচ্ছিল। বলছিল-তা তো হয়।
আমার স্বামী মাঝখান থেকে ফোড়ন কেটে বলল-ওর বউকে দেখতে খুব সুন্দর জানো তো। এই দীপু তোর মানিব্যাগে যে ফটোটা আছে বার করে দেখানা আমার বউকে।
দীপঙ্কর ওর পার্স থেকে একটা ছোট ফটো বের করে দেখাল। বাঃ মুখটা খুব সুন্দর। একদম চাঁদ পানার মতন। আপনার বউ এর জন্য আমারই কষ্ট হচ্ছে। আফসোস করছিলাম।
দীপঙ্কর এবার একটু অল্প হেঁসে জবাব দিল। -আপনার হ্যাজব্যান্ডকে এর জন্য একটা থ্যাঙ্ক ইউ দিন। ঐ তো আমাদের দুজনকে এবার আরো কাছে করে দিচ্ছে।
চোখটা ছোট করে আমার স্বামীর মুখের দিকে অবাক ভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, সেটা কেমন?
ও আমাকে গর্ব করে উত্তর দিল। All credit goes to your husband..
হেঁয়ালিটা বুঝতে পারিনি। শুনলাম যখন মনটা গর্বে ভরে উঠল। আমার স্বামী বলছে-ওর জন্য এখানেই একটা ফ্ল্যাট ঠিক করে দিলাম বুঝলে। এই একদম আমার বাড়ীর উল্টো দিকে। দীপঙ্কর বউকে নিয়ে পরশুই আমাদের এখানেই চলে আসবে। কাল ও শিলিগুড়ি যাচ্ছে বউ কে আনতে। তারপর দুইবন্ধু একসাথে। তোমারও গল্প করার একটা সাথী জুটে যাবে। একসাথে চারজনে মিলে ঘুরবো, বেড়াব আর ফুর্তী করব।
সেদিন কি হয়েছিল জানি না। শুধু এইটুকুই বুঝেছিলাম। আমার স্বামী হচ্ছে বউ এর ঠিক যোগ্যতম স্বামী। শুধু নিজের কথাই চিন্তা করে না। বন্ধু যাতে তার স্ত্রীকে নিয়ে সুখী হয় তার জন্য তার দরদ, আন্তরিকতা মনে রাখার মতন। আমি আমার স্বামীর জন্য Proud Feel করি। প্রার্থনা করি, সবার কপালে যেন ভগবান এমন স্বামীই জুটিয়ে দেন। দীপঙ্কর কিছুক্ষণ আর বসে থেকে তারপর চলে গেছিল। ওর চোখ মুখ দেখে বুঝেছিলাম আমার হাজব্যান্ডকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষাই খুঁজে পাচ্ছে না ও।
3
ওকে নিয়ে শুরুটা কিভাবে করব বুঝতে পারছিলাম না। প্রথমে ভাবলাম একটা চুমু খাব ওর গালে। তারপর ভাবলাম শুধু চুমু নয়। ওর ঠোটে ঠোটটা ধরে রাখব ততক্ষন, যতক্ষন না ওর ভাল লাগে। তারপর আবার ভাবলাম, স্বামীকে ভালবাসব এরজন্য আবার অত ভাবব কেন? ওকে নিয়ে আমি আমার খুশী মতন আদর করব। আদরটা সোহাগী আদর। স্ত্রী যেভাবে স্বামীকে সবকিছু উজাড় করে ভরিয়ে দেয় সেইভাবে। নিজেকে সমর্পন না করলে ঐ বা খুশী হবে কেন? হাজার হোক আমি তো ওর বিয়ে করা বউ। আর যাই হোক মনের মতন বর পাইনি বলে জীবনে তো কোনদিন আফসোস করতে হবে না। এই একটা কারনেই তো স্বামী-স্ত্রীর বিবাহিত জীবন সুখের হয়। বাবা মায়ের আদুরী মেয়ে তাদের ছেড়ে নতুন স্বামীর সাথে ঘর বাঁধতে আসে এমনি এমনি? ওকে ফুলশয্যার রাত থেকে দেখছি আজ অবধি সেই একই রকম। বিয়েটা একবছর হোল। কিন্তু এখনও যেন সদ্য ফোটা ফুল। এ ফুলে পচন কোনদিন ধরবে না। আমাদের বিবাহিত জীবন আজীবন সুখের হয়ে থাকবে। ঠিক অমর প্রেমের মতন। যে প্রেমের কোনদিন মৃত্যু হয় না।
চেয়ারে বসে একমনে ভেবে যাচ্ছিলাম। আর ভাললাগার মূহূর্তটাকে অনুভব করতে করতে মনটা খুশীতে ভরে উঠছিল।
আমার স্বামী কম্পুটারে বসে কাজ করছিল। ওকে পেছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। গলাটা দুহাতে জড়িয়ে ওর শরীরটা দোলাতে লাগলাম চেয়ারের উপরেই। ও কম্পুটারের মনিটরের দিকে মুখটা রেখেই আমাকে বলল-তুমি খুশী হয়েছ?
-ভীষন খুশী হয়েছি ভীষন।
ওকে আরো আবদ্ধ করতে ইচ্ছে করছিল। ওর মাথার উপর আমার গলা আর থুতনীটা রেখে ওকে ঐভাবেই জড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। মুখটা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে ওর ঠোটে চুমু খাওয়ার আগে ও বলল-আসলে বন্ধুর জন্য বন্ধু করবে না তো কে করবে বল? দীপঙ্কর ছেলেটা কিন্তু দারুন। ওকে তো আমি অনেকদিন ধরেই দেখছি। দেখ ও কিন্তু নিজে থেকে বলেনি আমায়। যখন বুঝলাম ব্যাচারা কষ্ট পাচ্ছে আমি নিজে থেকেই ওকে বললাম-এক কাজ কর না তুই আমার এখানেই বউ নিয়ে চলে আয়। আমি তোর জন্য একটা ভাড়াবাড়ীর ব্যাবস্থা করে দিচ্ছি। ঠিক করেছি কি না বল?
-একদম ঠিক করেছ। আমি এবার ওর ঠোটে চুমু খেলাম। চুমুটার সাথে আমার ভালবাসার শক্তি মেশানো ছিল। জিভটা যে কখন ওর ঠোটের স্বাদ নিতে নিতে ওর মুখের মধ্যে ঢুকে গেল টেরই পেলাম না। আমি আমার সমস্ত আনন্দটাই ওর ঠোটের মধ্যে উপচে দিতে চাইছিলাম। একটা আবেগ চলে এল মনে। ঠোটদুটোকে পাগলের মতন ওর ঠোটের সাথে মিলিয়ে দিয়ে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছিলাম না কিছুতেই।
এবার ওর সামনে এসে আমি ওর চোখের দিকে চাইলাম। মাথাটাকে দুহাতে ধরে ওর ঠোটটাকে কিছুক্ষণের জন্য মুক্তি দিলাম। আমার পরম স্বামীকে গর্বের স্বরে বললাম-এই জন্যই তো তুমি সবার থেকে আলাদা। আবার চুমু খাই তোমাকে।
কম্পুটারটাকে আর দেখতে পাচ্ছিল না ও। আমার শরীরটা তখন মনিটরটাকে আড়াল করেছে। চেয়ারের উপরই ওর দিকে মুখ করে ওর কোলের উপর চেপে বসলাম। এবার ওর শরীরের উপর শরীর ছেড়ে মন মাতানো চুমু খেতে লাগলাম ওকে।
ও হাঁসছিল। বলল-এই রেখা চেয়ার ছেড়ে পড়ে যাব। দাড়াও দাড়াও। একটু কাজ আছে ওটা সেরেনি।
-এখন কোন কাজ নয়। এখন এটা।
আমি ওর কানে আমার জিভটা রাখলাম। কানের লতিতে চুমু খেয়ে ছোট্ট করে চিমটির মতন কামড়ে দিলাম। আসতে আসতে ওর কানের কিনারায় জিভটা বোলাতে লাগলাম। নীচে থেকে উপর পর্যন্ত। কানের ভেতরে ছোট ছোট বৃন্তে আমার জিভটা বোলাতে লাগলাম। মনে হোল ওর যেন একটু উত্তেজনা আসছে এবার শরীরে।
বুকের ব্লাউজটা আসতে আসতে খুলতে লাগলাম। ও আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল। পাখীর মতন নরম বুকদুটো উন্মুক্ত করে ওর মুখটাকে চেপে ধরলাম আমার বুকের উপরে।
-আমাকে তুমি দুর্বল করে দিচ্ছ রেখা।
-দুর্বল নয়। দুর্বল নয়। আমি তোমাকে ভালবাসি গো। দেখ এখানে একটু মুখটাকে রেখে।
মুখটাকে রেখে চুপটি করে বসে থাক আমায় না ছেড়ে।
নিজের স্তনের বোঁটাদুটোকে ডুবিয়ে দিতে চাইছিলাম ওর ঠোটের ভেতরে। ওকে বোঁটাটাকে মুখে গ্রহন করতে দিলাম। ওর চুলে হাত বুলিয়ে ওকে চুষতেও আহবান করলাম। ও চুষছিল,জিভের লালায় ভিজিয়ে দিচ্ছিল আমার স্তনের বোঁটাদুটোকে। মনে হোল সারজীবন ও যেন আমাকে এমনি করেই পুলক জোগায় সারা শরীরে।
চেয়ার থেকে ওকে তুলে বিছানায় নিয়ে এলাম। একধাপ নিজেই এগিয়ে গিয়ে শায়ার দড়িতে হাত লাগিয়ে গিঁটটা খুলতে লাগলাম। একটু পরেই পায়ের কাছে শায়াটা স্তুপীকৃত হয়ে জমা পড়ল। শরীরের আবরণটাকে খোলস থেকে বের করতে পেরে আমি খুশী। ওর দিকে তাকিয়ে আছি। ও আমাকে দেখছে। আকাঙ্খার ইশারা। আমার মুখের হাসিটুকুর অর্থ বুঝে নিতে অসুবিধা হোল না ওর।
আমি ওর কামনার ধন।। যুগে যুগে যার ইন্ধন জুগিয়ে এসেছে নারীরা। স্বেচ্ছায় তার মূল্যবান বস্তুটি তুলে দিয়েছে তার প্রেমিকের নয়তো স্বামীর হাতে। সমর্পন করলাম। আমার সুরভিত উদ্যান। ও আমাকে শেষ রাত্রি অবধি করল। যেন ওস্তাদের মার। শুরু হলে শেষ হতেই চায় না।
৪
দীপঙ্কর আজ সকালেই চলে গেছে শিলিগুড়ি ওর বউকে আনতে। আমার স্বামী বলছিল-এই শোন না। ভাবছি প্রথম দিনটা ওদের আমাদের বাড়ীতেই খেতে বলি। -কি বল? এই প্রথম কলকাতায় বউকে নিয়ে আসছে। একসাথে দুজনে মিলে এলে যা আনন্দ হবে না। ওদেরও ভাল লাগবে। কি বল?
-একদম ঠিক বলেছ। আমিও তাই ভাবছিলাম। বউ নিয়ে আসছে। প্রথম কদিন আবার রান্নাবান্না কেন? তার থেকে এখানেই তো ভাল। একদম নিজের বাড়ীর মতন মনে করে। ওদের তুমি নেমতন্ন করে।
কাছে এসে আমার গালে একটা চুমু খেল ও। বলল–আমার বউটা না ঠিক আমার মতন।
-আর আমার বরটা?
ও হাঁসছিল। বলছিল-যেন দীপঙ্কর তোমার খুব প্রশংসা করে। বলে একদম খাঁটি বউ পেয়েছ তুমি। প্রকৃত ঘরনী। আজকালকার মেয়েরা তো সব উড়নচন্ডী। খালি পাখনা মেলে উড়ে বেড়াতে চায়। তুমি কত ভাগ্যবান।
আমিও হাঁসছিলাম। বউ এর প্রশংসা অন্যের মুখে। বললাম-কেন ওর নিজের বউ কি খারাপ? ছবিতে তো দেখলাম, মুখটা কি সুন্দর। একদম প্রকৃত ঘরনীর মতন।
-ঠিক বলেছ। একদম ঠিক। দীপঙ্কর ওর বউকে কত ভালবাসে। দেখতে পায় না বলে রোজ ফোন করে। একঘন্টা দুঘন্টা ফোন নিয়ে বসে থাকে। বুকের ভেতর গুমড়ে মরে। নতুন বিয়ে করেছে, বউকে কাছে পায় না এটা কি ঠিক? আমি হলে তো মরেই যেতাম।
-আর আমি বুঝি তখন খুব আনন্দ পেতাম? আমি মরে যেতাম না? যাকে মন দিয়েছি, শরীর দিয়েছি, ভালবাসা দিয়েছি। তাকে ছাড়া আমি বাঁচতাম? চিন্তাই করতে পারি না।
দুজনে যেন দুজনকে মুগ্ধ চোখে দেখছিলাম। একে অন্যকে ছেড়ে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি। ভালোবাসার শব্দটার এমনই মায়াজাল। যে বিশ্বাসে পতি পত্নী একই বন্ধনে আবদ্ধ থাকে চিরকাল। পৃথিবীর কোন শক্তি নেই যে তাকে আলাদা করবে। ভালবাসার এমনই গুন।
আমার ঠোটে চুমু খেয়ে ও বলল-তুমি দীপঙ্করের বউ এর কথা জিজ্ঞাসা করছিলে না? আমি যতদূর শুনেছি। ও নাকি খুব ভাল মেয়ে। ঠান্ডা স্বভাবের। দীপঙ্কর একদম সঠিক মেয়েকে বিয়ে করেছে। প্রার্থনা করি ওদের বিবাহিত জীবন আরো সুখময় হোক। কি বল? দীপঙ্করকে তো আর বউ এর কথা ভেবে কষ্ট করতে হবে না। ওতো কাল থেকেই কাছে কাছে পেয়ে যাচ্ছে বউকে। আর চিন্তা কি?
-তুমিই তো কাছে করে দিলে ওদের। এটার জন্য দেখলে না দীপঙ্কর তোমার উপর কত খুশী।
-সত্যি খুশী। ও আমায় বলেছে। তোর উপকারটা আমি চিরকাল মনে রাখব। আমাকে প্রচুর থ্যাঙ্কস জানিয়ে গেছে।
একটু পরে অফিসের কাজে বেরিয়ে গেল ও। যাওয়ার আগে বলে গেল আজ তোমার জন্যও একটা সারপ্রাইজ আছে। সন্ধেবেলা যখন ফিরব তখন বলব।
কি সেই সারপ্রাইজ? এটা ভাবতে ভাবতেই আমার সারাদিন কেটে গেল। আগ্রহ আর কৌতূহল নিয়ে সন্ধেবেলা আমি ওর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মনে হোল ও বোধহয় আমার জন্য কিছু কিনে আনছে, অফিস ফেরত।
কলিংবেলের শব্দ শুনে দরজা খুলে সামনে দেখি মিটকী মিটকী হাঁসছে আমার দিকে তাকিয়ে।
-কি হোল ভেতরে আসবে না?
-আমার সারপ্রাইজটা দেখবে না।
-কই কোথায়?
আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল কিছুটা দূরে। দেখি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছে একটা নীল রঙের নতুন মারুতী সুজুকী ফোরহূইলার। আমাকে চমকে দেওয়ার মতন সারপ্রাইজ।
-এটা তুমি কিনলে?
-হ্যাঁ। আমার রেখাকে দেওয়া আমার ভালবাসার উপহার।
আমি অবাক চোখে চেয়ে রইলাম ওর দিকে। ভাবতেই পারছিলাম না এতবড় সারপ্রাইজ অথচ ও কত সহজ ভাবে বলে গেল বেরোনোর টাইমে। ফিরে এসেছে একটা আস্ত গাড়ী নিয়ে। এও বোধহয় ওর মতন স্বামী বলেই সম্ভব।
আমাকে গাড়ীতে বসাল ও। ওর হাতে স্টিয়ারিং। বলল-চল কোথাও ঘুরে আসি। এই শহরটারই কাছে কোথাও। আজ আর ঘরে নয়। শুধু এই গাড়ীতে তুমি আর আমি। এবার তাহলে একটু সেজে নাও।
তাড়াতাড়ি সেজেগুজে আবার গাড়ীতে চড়ে বসলাম। খুশী আর আনন্দতে মনটা নেচে উঠেছে। জানলার কাঁচ দিয়ে কলকাতা শহরটাকে দেখছি। গাড়ী চলতে শুরু করেছে। এ যেন নতুন ভাবে দেখছি শহরটাকে। ঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ও বলল-কি দেখছ?
-কিছু না। ঐ ফুটপাত আর দোকানগুলো।
-আর?
-ভাবছি।
-কি?
-কাল থেকে ভাললাগা গুলো সব একটার পর একটা দিয়ে যাচ্ছ আমাকে। আমি কি দেব তাই ভেবে পাচ্ছি না।
ও আমাকে কাছে ডাকল। এই শোন না।
আমি কাছে গেলাম। গাড়ী চলা অবস্থায় ওর বুকে মুখ রাখলাম। ওর এক হাতে স্টিয়ারিং, আর এক হাতে আমাকে জড়িয়ে রেখেছে। আবেগে চোখে জল চলে এল। ও বলল-এই কি ভাবছ বল না?
-ভাবছি, এত ভালবাসছ আমাকে। আর এটা যদি কেউ ছিনিয়ে নেয় আমার হাত থেকে। ও হাঁসল। আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার মাথায় একটা চুমু খেল। বলল-দূর পাগলি। তাই আবার কখনও হয় নাকি?
আমি তখনও খুশীর আনন্দে কেঁদে যাচ্ছি। আর মনে মনে ভগবানকে ডাকছি। ভগবান তাই যেন হয়। কেউ যেন ওকে কেড়ে না নিতে পারে কোনদিন আমার কাছ থেকে। ভালবাসার বাঁধনে ও যেন এভাবেই আবদ্ধ থাকে চিরকাল। চিরজীবনের জন্য। ওকে ছাড়া এক মূহূর্তের জন্য বেঁচে থাকা? আমি কোনদিন ভাবতেই পারি না।
আমরা অনেকরাত অবধি গাড়ীতে ঘুরলাম। হোটেলে রাত্রিরে ডিনারটাও সারলাম। ফিরে এলাম দুজনে। শরীরি ভালবাসায় আরো কিছুক্ষন আনন্দ নিলাম, দুজনে দুজনের সঙ্গমসুখ উপভোগ করলাম। ওর বুকে মুখ রেখে ঘুমিয়েও পড়লাম। কিন্তু স্বপ্নের মধ্যে কেউ যেন আমার কানে কানে কি বলে গেল-
“ এই রেখা শুনছ। শুনছ। এই রেখা। আমি খুব চাপা স্বরে শুনতে পারছি। সে বলছে-তোমার স্বামীকে শেষ পর্যন্ত ভালবাসা দিয়ে ধরে রাখতে পারবে তো রেখা? এই রেখা এই রেখা তুমি পারবে তো? শুনছ।”
আমি ধরমড় করে বিছানার উপর উঠে বসলাম। ও ঘুমোচ্ছে অঘোরে। আমার মাথার উপরে ঘাম হচ্ছে। এক গ্লাস জল খেলাম ঢকঢক করে। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। স্বপ্নটা কি সত্যি হতে যাচ্ছে নাকি? এ মা এমন স্বপ্ন কেন আমি দেখলাম? কি হবে তাহলে? চিন্তায় আমার বাকী রাতটুকু ঘুমই হোল না আর।
৫
সকালবেলা ও ঘুম থেকে ওঠার পর ওর হাতে চায়ের কাপটা ধরিয়ে ওকে বললাম-জানো কাল রাতে কি একটা বাজে স্বপ্ন দেখেছি আমি।
-কি স্বপ্ন?
-কে যেন আমাকে বারবার বলছে। এই তোমার স্বামীকে ধরে রাখতে পারবে তো? পারবে তো? কি বাজে স্বপ্ন।
-স্বপ্ন আবার সত্যি হয় নাকি?
-কি জানি? তারপর তো আর ঘুমই হোল না আমার।
ও চা খাচ্ছিল। মজা করে আমাকেও বলল-আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি কয়েকদিন আগে।
-কি স্বপ্ন?
-আমাকেও একজন বলছে-তোমার বউকে ধরে রাখতে পারবে তো? পারবে তো?
- দূর তুমি খালি ফাজলামি মারো।
ও হাঁসছিল। বলল-এই শোন। এবার আমি বাজার যাব। ওরা আসছে। সন্ধেবেলাই আসতে বলব। রাত্রে ডিনারের নেমতন্ন। তুমি কিন্তু আজ একদম ফাটিয়ে রান্না করবে। আমি অফিস থেকেও ছুটী নিয়েছি। সারাদিন বাড়ীতেই থাকব।
আতিথেয়তার এমন তোড়জোড়। এ যেন আমার স্বামী বলেই সম্ভব। ও বাজারে গেল। প্রচুর বাজার করে বাড়ী ফিরল। আমি রান্নার পদ কি হবে তাই ঠিক করলাম। ছোটবেলায় মায়ের হাতে রান্না শিখেছি। সবাই বলে। এমন রান্না খেলে নাকি মুখে লেগে থাকে। দীপঙ্কর আর ওর বউ এর জন্যও যত্ন নিয়ে রান্না করলাম। ওরা প্রথমবার একসাথে আমার বাড়ীতে আসছে। আমার স্বামী সব ব্যাপারেই আমার যেমন প্রশংসা আর গুণগান করে সেটা প্রমান করার জন্য আমিও যেন বদ্ধপরিকর ছিলাম।
ঠিক তখন সন্ধে ছটা। দরজার কলিংবেলের উপর কারুর হাত পড়ল। ওটা বাজছে সুর করে। আমার স্বামীকে আমি বললাম-দেখ তো ওরা এসেছে বোধহয়।
দরজা খুলতেই দুজনে একসাথে ভেতরে ঢুকল। যেন আদর্শ মানানসই দুজন সুন্দরী স্বামী-স্ত্রী। আমরা অতিথি আপ্যায়ন শুরু করে দিলাম। মেয়েটার মুখের দিকে আমি তাকাচ্ছিলাম। ওর মুখশ্রী খুব সুন্দর। কিন্তু কথা খুব কম বলে মেয়েটা। বারবার আমার মুখের দিকে আর আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকাচ্ছিল। শোবার ঘরে ওকে আলাদা ভাবে ডেকে নিয়ে ওর থুতনীতে হাত রাখলাম।–তোমার নাম কি ভাই?
-দামিনী।
-বাবা। দীপঙ্করের সাথে দামিনী। দারুন মিলেছে তো। তা তুমি এবার খুশী তো? এবার আর স্বামী তোমার কাছছাড়া হবে না। কি বল।
জবাব দিল না আমার কথার। হয়তো লজ্জায়। কিন্তু ওর চোখে মুখে কি যেন একটা ফুটে উঠল। যে ভাষার অর্থ আমি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারলাম না।
রাত্রে খাবার টেবিলে আমি দীপঙ্করকে বললাম-কি ব্যাপার? সেই আসার পর থেকে দেখছি বউ এর সামনে কথাই বলছেন না। আপনারা দুজনেই চুপচাপ। আর আমরা একাই কথা বলে যাচ্ছি বকবক করে।
দীপঙ্কর মাংসের হাড় চিবোতে চিবোতে শুধু বলল-আপনার হাতের রান্না খুব চমৎকার। দারুন করেছেন। আমার বউকে এবার একটু শিখিয়ে দিন তো। ওকে তো এইজন্যই এখানে নিয়ে এসেছি। ওঃ এমন রান্না অনেকদিন খাইনি।
ওর বউ আড়চোখে দীপঙ্করের দিকে তাকাচ্ছিল। আমার স্বামীও তখন আঙুলে লেগে থাকা মাংসের ঝোলটা চেটেপুটে খাচ্ছে। আমি এবার দুজনের দিকে তাকিয়ে বললাম-আপনারা কাল থেকে এখানেই খাবেন দুজনে। এখন কয়েকদিন। রান্নাবান্নার ঝেমেলা আর ফ্ল্যাটে পোয়াতে হবে না। তার থেকে আমার এখানেই। একদিন দামিনীও রান্না করবে। আর আমরা সবাই আনন্দ করে খাব। কি বলুন।
কেউ কিছু না বললেও আমার স্বামী হঠাৎ বলে উঠল।–তাহলে হয়ে যাক একদিন। এই দীপঙ্কর। তোমার বউ এর হাতে রান্না আমরাও খেতে পারছি একদিন। কি বল।
দামিনী আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকালো। কি রকম একটু অন্যরকম। ঠিক বুঝতে পারলাম না ওভাবে তাকানোর মানেটাকে। এতক্ষণ বাদে ও শুধু বলে উঠল। কালকে আমাদের ফ্ল্যাটে আসুন আপনারা দুজনে। আমি আপনাদের চা করে খাওয়াব।
পরের দিন সকালে শরীরটা খুব খারাপ। বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারছি না। মেয়েদের এই একটা দিনই খুব যন্ত্রনাদায়ক। যখন পিরিয়োডের ব্যাথা ওঠে। মনটা খারাপ করে ওকে বললাম-মনে হচ্ছে তোমার বন্ধুর ফ্ল্যাটে আজ যেতে পারব না। ভীষন কষ্ট হচ্ছে।
-কি করব তাহলে? দীপঙ্করকে না বলে দিই।
-না না তুমি একা ঘুরে এস। ওর বউ নাহলে খারাপ ভাববে। আমি না হয় অন্য একদিন।
-ঠিক আছে ঠিক আছে। আমি এখন অফিসে যাচ্ছি। বিকেলে ফোন করব তোমাকে। তখন যদি তোমার ব্যাথাটা কমে যায়।
সারাটা দিন শুধু যন্ত্রনাতেই কুঁকড়ে গেলাম। ও আমাকে বিকেলে ফোন করল। কিন্তু আমি আর যেতে পারলাম না। সন্ধে থেকে রাত্রি পর্যন্ত ঐ একভাবেই বিছানায় কাটিয়ে দিলাম শুয়ে শুয়ে।
রাত্রি তখন বাজে নটা। ও এখনও দীপঙ্করের ফ্ল্যাট থেকে ঘরে ফেরেনি। জমিয়ে গল্প করছে মনে হয়। ভাবলাম মোবাইলে একটা ফোন করব কিনা? তারপর ভাবলাম। এইতো কাছেই ওদের ফ্ল্যাট। আসতে তো দুমিনিট। গল্প করছে করুক। আমি এভাবেই আরো কিছুক্ষণ শুয়ে কাটিয়ে দি।
জানিনা চোখটা বুজে এসেছিল কখন। দরজায় কলিংবেলের আওয়াজ শুনে কষ্ট করে উঠে গেলাম। দেখলাম ও দাড়িয়ে।
-ভেরী সরি রেখা। আমার দেরী হয়ে গেল। তুমি ঘুমিয়ে পড়েছিলে?
-হ্যাঁ তুমি গেছিলে?
-গেছিলাম। আর বোল না দীপঙ্করটা বাড়ী নেই। আমাদের যেতে বলে নিজেরই পাত্তা নেই।
-কেন?
-অফিসের কাজ পড়েছে। ওর ফিরতে নাকি রাত্রি হবে। বউটা একা ছিল। বলল-বৌদি আসেনি? তোমার কথা বললাম। আমাকে খুব যত্ন-আত্নি করল। চা করে খাওয়ালো। নিজের সন্মন্ধে অনেক কথা বলল। গল্প করতে করতে কখন যে সময় চলে যাচ্ছে খেয়ালই নেই। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম বারোটা বাজে। তাই চলে এলাম। তুমি একা রয়েছ।
-অ্যাঁ বারোটা? দীপঙ্কর এখনও ফেরেনি?
-না। ওর বউ একাই রয়েছে বাড়ীতে।
ওকে যেন সেদিন কেমন অন্য মুড এ দেখলাম। রাত্রে শোয়ার আগে বেশী কথা বলল না। একে শরীর খারাপ। মিলন ঘটানোর শক্তি নেই শরীরে। আশা করলাম একটা চুমু অন্তত পাব। সেটাও যখন পেলাম না। তখন পাশ ফিরে শুধু মনটা খারাপ করে শুয়ে রইলাম।
ভেতর থেকে কে যেন খোঁচা দিচ্ছিল বারবার। মনে মনে ভাবছিলাম দূর ছাই ঐ বাজে স্বপ্নটাকে কেন যে দেখতে গেলাম? তাহলে কি জীবনে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে এবার?
৬
দীপঙ্করের বউটা বেহায়া আছে তো? আমি নেই, দীপঙ্কর নেই অথচ এতঘন্টা আমার স্বামীর সাথে বসে বসে গেঁজিয়ে গেল। দূর ছাই কিসব উল্টোপাল্টা ভাবছি। একদিনেই আমার স্বামীটা এত খারাপ হয়ে গেল? আমি বোধহয় সন্দেহ প্রকাশটা একটু বেশী পরিমানে করছি। নিজের উপরই রাগ হচ্ছিল। ওতো আমাকে এত ভালবাসে। অকারণে এইভাবে কাউকে দোষ দেওয়াটা ঠিক নয়। আমি পরের দিন আবার যথারীতি স্বাভাবিক হলাম। পিরিয়োডের ব্যাথাটাও অনেকটা কমে গেছে। ওকে বললাম-এই আজ আমি যাব তোমার সাথে ওদের ফ্ল্যাটে।
আমাকে অবাক করে ও বলল-দীপঙ্কর ওর বউকে নিয়ে আজ একটু ঘুরতে বেরোবে। আমাকে সকালে ফোন করেছিল,তুমি তখন ঘুমিয়ে ছিলে। বলল-বউকে নিয়ে অন্য একদিন এস। আমার গাড়ীটা চেয়েছিল। আমি দিতে রাজী হয়েছি।
-তুমি আমাদের কথাও বললে না কেন? একসাথে যেতাম। আনন্দ হোত।
-তোমার শরীর খারাপ। তুমি যেতে পারবে কিনা তাই বলেনি। আর তাছাড়া বিয়ে করে বউকে নিয়ে এই প্রথম বেরোচ্ছে, আমি আর ওদের আনন্দতে ব্যাঘাত ঘটাতে চাইনি।
-ঠিক আছে যাক। তুমি আজ তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরো কিন্তু। একসাথে দুজনে মিলে গল্প করব।
ও কাজে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার আগে ওর কাছে ঠোটের চুমুটা আবদার করে চাইতে হোল। ও আমাকে চুমু দিল। কিন্তু সেই পুরোন ভালবাসার মিষ্টি স্বাদটা কিন্তু চুমুর মধ্যে মেশানো ছিল না।
সারাটা দিন এরপরে বাড়ীতে একা একা কাটিয়ে দিলাম। সন্ধে তখন সবে উত্তীর্ণ হয়েছে। ভাবছি ও কখন ফিরবে। ছটা থেকে সাতটা, আটটা নটাও যখন বেজে গেল, মনটা ভীষন চঞ্চল হয়ে উঠল। মোবাইল নিয়ে ওকে ধরার চেষ্টা করলাম। তিন চারবার রিং করলাম। দেখলাম মোবাইল সুইচ অফ। ভীষন একটা বিরক্তি আর হতাশার ভাব ফুটে উঠল আমার চোখে মুখে। এতকরে বললাম তাও তাড়াতাড়ি ফিরল না। যাকে নিয়ে দুবছরের কাছাকাছি ঘর করছি, তার হঠাৎ এমন পরিবর্তন? এর রহস্যটা কি?
আমার ভিতরটা রাগে ছটফট করছিল। ভাবছিলাম ও এলেই ওকে সব রাগ উপড়ে দি। একজন কেমন বউ নিয়ে ঘুরতে গেছে। আর আমি কিনা ঘরে বসে হাত কামড়াচ্ছি আঙুল কামড়াচ্ছি। রাত্রি এগারোটা বাজে আমার স্বামী এখনো ফেরেনি। এর থেকে খারাপের খারাপ আর কি আছে?
মাথায় বাজটা পড়ল একটু পরেই। মোবাইলে বেশ কিছুক্ষণ পরে দেখি একটা ফোন। আমি তাড়াতাড়ি রিসিভ করলাম। বললাম-হ্যালো কে বলছেন?
ও প্রান্ত থেকে গলা ভেসে এল। গলাটা দীপঙ্করের। বৌদি আমি দীপঙ্কর বলছি।
-হ্যাঁ বলুন।
-সর্বনাশ হয়ে গেছে।
-কি?
-আমি বলছি। মনটাকে একটু শক্ত করবেন। আমি খুব ভেঙে পড়েছি। জানি আপনিও পড়বেন। তাই সব এসে বলছি। এখন এটা যেন জানাজানি না হয়।
-কি হয়েছে বলবেন তো?
-দামিনীকে নিয়ে ও কোথায় চলে গেছে।
-কে?
-আপনার হাজব্যান্ড।
-কি যা তা বলছেন।
-সত্যি বলছি। আমাকে দামিনী ফোন করেছিল। বলল-তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্কের এখানেই শেষ। আমি চলে যাচ্ছি। আমাকে আর ধরার চেষ্টা কোর না। তুমি আমাকে খুঁজেও পাবে না আর।
-কিন্তু আমার হাজব্যান্ড?
-ঐ তো সাথে রয়েছে দামিনীর সঙ্গে। দামিনীকে নিয়ে ও পালিয়েছে।
টেলিফোনে কথা বলতে বলতে আমি কাঁপছি। -কিন্তু আপনার তো বউকে নিয়ে ঘুরতে বেরোনোর কথা?
-ঘুরতে? আমি কাল থেকে কলকাতায় নেই বৌদি। জামশেদপুরে এসেছি অফিসের কাজে। তারমধ্যেই ওরা দুজন এসব কান্ড করেছে।
টেলিফোনের লাইনটা তখনও দীপঙ্কর ছাড়েনি। আমি আসতে আসতে কথা বলার শক্তিটা হারিয়ে ফেলছি। হাত পা গুলো অবশ হয়ে যাচ্ছে। শরীরটা ক্রমশ পাথরের আকার ধারন করতে শুরু করেছে। মোবাইলটাকে একপাশে রেখে আমি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি মেঝের দিকে। চোখের কোনাটায় জল চিকচিক করছে। এক্ষুনি ওটা ঝরঝর করে ঝড়ে পড়বে। ভেতরটা পুরো ফেটে যাচ্ছে। নিজের মনকে সান্তনা দিতে পারছি না। খালি ভাবছি আমি তো এমনটা চাইনি। তাহলে কেন এমনটা হোল? এ আমার কি করলে তুমি ভগবান। এখন আমি কার কাছে যাব? কিভাবে বাঁচব বাকী জীবনটা। হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিলাম।
দীপঙ্কর ওদিক থেকে ফোনে তখনও চেঁচিয়ে যাচ্ছে। বৌদি দোহাই। রিকোয়েস্ট করছি দুম করে কিছু করে বসবেন না। আমি এখনি গাড়ী ধরছি কলকাতায় ফিরব বলে। আপনি নিজেকে একটু শক্ত করুন। আমাকে দেখুন তো? আমিও তো আপনারই জায়গায়। আমি আসছি। প্লীজ যতক্ষণ না ফিরছি। কিচ্ছু করবেন না। বোদি আপনি শুনছেন? বৌদি-
৭
শরীরটাকে পাথরের মতন করে কতক্ষণ বসে রইলুম জানি না। আমার তখন আর নড়াচড়া করার শক্তি নেই। বুঝতে পারছি জীবনে চরম একটা অঘটন ঘটে গেছে এবার। যা হয়েছে আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি কোনদিন। এমন নির্লজ্জ কারণ ঘটালো দীপঙ্করের বউটা। কাল যখন ওকে দেখেছিলাম এমনটা যে হবে তাতো বুঝিনি। কি এমন হোল যে একদিনেই আমার স্বামীটাকে কব্জা করে নিল। মেয়েটাকে দেখে তো এতটা খারাপ মনে হয় নি। তাহলে?
যে লোকটা আমাকে নিয়েও এত বিশ্বাসের সাথে ঘর করল তার একদিনেই এমন চরিত্র বদল? এ কি করে সম্ভব? আমার স্বামীর স্বভাবে তো কোনদিন দোষ চোখে পড়ে নি। তাহলে? কি করে?
মাথাটা বনবন করে ঘুরছে। মনে হচ্ছে পড়ে যাব এবার। চক্কর দিচ্ছে। কোনরকমে দেওয়াল ধরে ধরে বিছানার দিকে গেলাম। এখন একটা ঘুমের ওষুধ দরকার। আমি ঘুমোব। ভাল লাগছে না। জানি না কাল সকালে উঠে সূর্যের মুখ দেখতে পাব কিনা। তবুও আমি ঘুমোব। কারন আমার কিছুই ভাল লাগছে না।
দীপঙ্কর এলো সকালে। কলিংবেলটা বাজছিল আমি শুনতে পাইনি। ঘুমে অচৈতন্য। দীপঙ্কর বাইরে থেকে মুখেও ডাকছে। বৌদি দরজা খুলুন। কারন ও ভাবছে আমি আবার সত্যি সত্যি কিছু করে বসেছি কিনা। অনেক ডাকাডাকির পর বিছানা থেকে উঠে দরজা খুললাম। ও সারারাত বাসে চেপে এসেছে। চিন্তায় ঘুমোতে পারেনি। আমার দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু বলতে লাগল। আমি শুনছি কিন্তু আমার কথা বলার শক্তি নেই। কালকের ঘটনা যেন আমার শরীরের সব শক্তি কেড়ে নিয়েছে।
-কাল রাত্রে কিছু খেয়েছেন?
-না।
-আপনার শরীর ঠিক আছে তো?
-না ঠিক নেই।
-এখন কিছু খেয়ে নিন বোদি। আমি কচুরী টচুরী কিছু কিনে নিয়ে আসব? খাবেন?
-না না আমি খাব না। ভাল লাগছে না।
আমার আবার কান্না আসছে চোখে। দীপঙ্করের চোখে মুখে হতাশা। ও একনাগাড়ে বলে যাচ্ছে। আর আমার চোখ দিয়ে ফোটা ফোটা জল গড়িয়ে পড়ছে মাটিতে।
-কি যে হোল কিছুই বুঝতে পারলাম না। শিলিগুড়িতে আমার ফ্ল্যাটে ওকে আমি নিয়ে গেছিলাম। ওখানেই দামিনীর সাথে ওর প্রথম আলাপ। হয়তো এ ব্যাপারটা ও আপনাকে বলেনি। নিজেই বলল-তুই বউকে শুধু শুধু এখানে ফেলে রেখেছিস কেন। তার থেকে আমার ওখানে চলে আয়। আমি ফ্ল্যাট ঠিক করে দিচ্ছি তোদের জন্য। আমিও খুশী হলাম। দামিনীতো হলই। কিন্তু ওর মনে যে এই মতলব ছিল জানতাম না। দামিনী বরাবরই একটু অন্য টাইপের মেয়ে। প্রচন্ড জেদী। বাবার পয়সা আছে প্রচুর। আমাকে বলল-বিয়ে করে বউকে সময় দিতে পারো না। আমি কিন্তু এরকম করলে ডিভোর্স চাইব তোমার কাছে। দেখলাম সমস্যার সমাধান করার এটাই একমাত্র উপায়। আমি সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি। কলকাতায় আপনাদের এখানে চলে এলাম। এসেই যত বিপত্তি।
দীপঙ্কর চাইছিল থানায় গিয়ে একটা ডায়েরী করতে। ওকে মানা করলাম।–না না এসবের দরকার নেই। সাতকান হবে। সবাই ছি ছি করবে। আর যে চলেই গেল, তাকে ওভাবে ফিরিয়ে এনে লাভ কি?
আমার কান্না থামল না। দীপঙ্কর বলে যাচ্ছে। -আপনাদের তো আসার কথা ছিল আমার ফ্ল্যাটে। চায়ের নেমতন্ন। আপনি যেতে পারেন নি। হঠাৎই অফিস থেকে আরজেন্ট কল। আমাকে জামশেদপুর যেতে হবে। দামিনী দেখলাম প্রচন্ড অসুন্তুষ্ট। আমার উপরে রাগ যেন থামতেই চাইছে না। অনেক কষ্টে ওকে বুঝিয়ে বললাম-তুমি তো আছ। ওরা আসুক না। তোমার ভাল লাগবে। আমি বাইরে যাচ্ছি ওদের কাউকে বলছি না। তাহলে ওরা আসা ক্যানসেল করে দেবে। আমি চলে গেলাম। তারপরেই কি যে হয়ে গেল। ভাবতেই খারাপ লাগছে।
দীপঙ্করের কথা শুনে আমার হঠাৎ খেয়াল হোল, দীপঙ্কর যে জামশেদপুর গেছে, সেটা কিন্তু আমার স্বামী বেমালুম চেপে গেছে আমার কাছে। ও বলেছিল অফিসের কাজে গেছে। ফিরতে রাত্রি হবে। তাই নাকি দামিনীর সাথে একা একা বসে গল্প করেছে। আমি দীপঙ্করকেও বললাম সেই কথা। ও শুনল অবাকও হোল। কিন্তু দুজনের একটা চিন্তাই মাথায় বারবার ঘুরপাক খেতে লাগল। সেদিন কি এমন হয়েছিল যে দুজনে এমন ঘৃণ্য বেপোরোয়া সিদ্ধান্ত নিল। সন্ধেবেলা আমিও ছিলাম না। দীপঙ্করও ছিল না। তাহলে? কি এমন ঘটল যার জন্য পরের দিনই ওরা দুজনে মিলে পালিয়ে গেল একসাথে। এ প্রশ্নের উত্তর কারুর জানা আছে কি? উত্তরটা আমিও জানি না। দীপঙ্করও না।
৮
এমন একটা কেলেঙ্কারীতে প্রাণের মানুষটা জড়িয়ে পড়লে কষ্টতো হয়। আমারও হয়েছিল। জানিনা এই কলঙ্কের বোঝা সারাজীবন আমাকে বইতে হবে কিনা। কিন্তু পাপ ধোয়ার জন্য আমিই বা কি করতে পারি? মনে হচ্ছিল জীবনটা যেন এই পঁচিশ বছরেই থেমে গিয়েছে। আর টানতে পারছি না।
তিনদিন বাদে সেই দূঃসংবাদটা পেলাম। আমার ভেতরটা হূ হূ করে উঠল। হাজার হোক ও আমার স্বামী। আমারও তো মন বলে একটা কথা আছে। খবরটা এলো চিঠির মাধ্যমে। দীপঙ্কর আমার হাতে ধরাল চিঠিটা। বলল-ও চিঠিতে মানা করেছিল এটা আপনাকে দেখাতে। কিন্তু না দেখিয়ে আমিও পারলাম না। বলতে বলতে ওর চোখেও জল চলে এল।
-কিসের চিঠি?
দীপঙ্কর বলতে চাইছিল না। আমিই নিজেই দেখলাম খোলা খামের বাঁদিকে লেখা Mr. Prasenjeet Mitra expired today. একি? নিজের মৃত্যু সংবাদ নিজের চিঠিতে। অন্যায় ও করেছে তা বলে মৃত্যুসংবাদ। এটা কেন?
চোখ ফেটে জল আসছিল। চিঠিটা খুললাম। ঝাপসা চোখে ওর দীর্ঘ চিঠি পড়ার চেষ্টা করলাম। চিঠিটা আমাকে ও লেখেনি। লিখেছে দীপঙ্করকে।
প্রিয় দীপঙ্কর,
এই চিঠি লিখতেই যত সময়। তারপর এটা খামে বন্ধ করে স্পীডপোস্ট করব তোমায়। আর কয়েক ঘন্টা পরেই আমার মৃত্যু। তুমি যখন এই চিঠি পাবে তখন আমি ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছি।
একটাই অনুরোধ তোমার কাছে। এই চিঠির কথা রেখাকে বোল না। ও বড় ভালো মেয়ে। আমি কোনদিন ক্ষমা পাব না ওর কাছে। তাই এই চিঠি শুধু তোমাকেই লেখা। অনেক কষ্ট দিয়েছি, তোমাদের দুজনকেই। তাই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছি আজ। যে কলঙ্কের দাগ আমি আমার জীবনে লাগিয়েছি, তার পরিণতি এমন হবে এটাতো জানাই ছিল। কিন্তু সত্যি বলছি বিশ্বাস কর, এমনটা যে হোক আমি কিন্তু চাইনি। কি করে যে হয়ে গেল বুঝলাম না।
রেখাকে বিয়ে করে আমি তো সুখীই ছিলাম। তুমি নিজেও দেখেছ। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমাদের নিজেদের মধ্যে মনের কত মিল। তাহলে এমন কেন হোল? বলি তোমাকে সেই ঘটনাটা।
আমি যেদিন তোমার সাথে শিলিগুড়ি গেলাম। সেদিন তোমার বউই একপ্রকার জোড় করেছিল আমাকে। বলতে পারো হূমকী। তুমি যেই দোকানে গেছ, তোমার বউ আমাকে বলল-আপনি ওর বন্ধু বলে তাই আপনাকে বলছি। কিছু একটা ব্যবস্থা করুন। নইলে আমি কিন্তু ওকে ডিভোর্স দিয়ে দেব। কথাটা খারাপ লেগেছিল আমার। তাই তোমার কথা চিন্তা করেই আমি কলকাতায় তোমার বাসার ব্যাবস্থা করে দিই। আমি বুঝতে পেরেছিলাম তুমি তোমার বউকে যৌনতৃপ্তি দিতে পারো না।এতে তোমার কোন দোষ নেই। একসাথে থাকলে তখন আর কোন সমস্যা হবে না। তাই কলকাতায় ফিরেই ফ্ল্যাটটা ঠিক করলাম। আমি রেখাকেও জানিয়েছি সেকথা।
কিন্তু তোমার বউ আমার সাথে ছল করল। কিছু মনে কোর না দীপঙ্কর। বউটি তোমার মোটেই ভাল হয় নি। আমি কি রেখাকে অবাঞ্ছিতা, অনাহূতা আর উপেক্ষিতা করতে চেয়েছিলাম? অথচ তোমার বউই আমাকে শারিরীক সন্মন্ধে বাধ্য করল। এখন এই পোড়ামুখ নিয়ে আর কি করতে যাব ওর কাছে? তাই-
তুমি আমাকে সেদিন ফোনে জানাও নি যে তুমি নেই। তাহলে আমি হয়তো যেতাম না। রেখাও যখন যেতে পারল না। আমার একা যেতে এমনি ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু যাওয়ার পরই ও আমাকে নিয়ে বেহায়াপনাটা শুরু করল।
ঘরে ঢুকতেই প্রথমে ওর আসল চেহারাটা বুঝিনি। দেখলাম খুব সেজেছে। ঠোটে লাল লিপ্সটিক। ভালোই গল্প করছিল। তারপরই হঠাৎ বলে উঠল-আপনি এই জন্যই কি নিয়ে এলেন আমাকে?
আমি বললাম-কেন?
ও বলল-আপনার বন্ধু তো এখানে এসেই আমাকে ফেলে জামশেদপুরে পালাল। এই ব্যাপারে কি বলবেন?
আমি বললাম-ও এই? ওতো চলে আসবে ২-১ দিনেই।
হঠাৎ আমার দিকে ঝুকে তোমার বউ বলল-এই দুদিনে আমার চলবে কি করে?
আমি ঘাবড়ে গেলাম। বুঝলাম তোমার বউ এর খুব সেক্স। এরপর আমার গায়ে পড়ে ন্যাকার মতন বলল-আমাকে তুমি বলুন না। আমি তো বয়সে ছোট আপনার কাছে।
আমি বললাম-তোমার আপত্তি নেই তো?
ও বলল-না না আপত্তি কেন হবে? আমিও যদি তুমি বলি আপনাকে?
বুঝতে পারলাম, ব্যাপারটা শুধু তাড়াতাড়ি নয় একপ্রকার বাড়াবাড়ি হচ্ছে। এরপর তোমার স্ত্রী দামিনী চরম নির্লজ্জতার পরিচয় দিল।
আর কি বলব? ও খুব সহজেই ওর শরীরের মানচিত্রগুলো উদ্ভাসিত করে দিল আমার সামনে। দেখছি নিজের গায়ে জড়ানো শাড়ীটা খুলছে আমার সামনে। যেন কোন দ্বিধা নেই। লজ্জ্বা নেই। বেহায়ার মতন নিজেকে উন্মুক্ত করছে।
ওকে এভাবে শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করতে দেখে আমিও খুব বিরক্ত হয়ে উঠেছি। রেগে বললাম-এ কি করছ? তোমার লজ্জা নেই।
তোমার বউ আমাকে জবাবে বলল-ন্যাকামি কোর না। নিজের বউ যখন শাড়ী খোলে তখন তো কিছু বল না?
আমি তখন চোখের সামনে একি দৃশ্য দেখছি। এ বড় বিরক্তি কর। কি করব বুঝতে পারছি না। ঘাবড়ে যাচ্ছি আরো।
ও আমাকে আরো বিপদে ফেলে দিয়ে বলল-তোমাকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম, ভেতরে ভেতরে ভীষন ছটফট করেছিলাম। তুমি বোঝ না মেয়েরা কি চায়? এবার একটু জাগো তুমি। জাগতে পারছ না? আমি থাকতে পারছি না। আমাকে তৃপ্ত কর প্লীজ।
আমাকে তখন চুমু দেওয়ার জন্য লিপস্টিক চর্চিত ওষ্ঠদ্বয় বাড়িয়ে দিয়েছে তোমার স্ত্রী দামিনী।
আমি বললাম-না না একি করছ ছাড়ো আমাকে? এটা ঠিক নয়।
ও বলল-কি ঠিক নয়? এবার যেন ওর রুদ্র মূর্তি। লজ্জা করে না? এতদিন একজনের সাথে ঘর করে বন্ধুর স্ত্রীর সাথে গা ভাসিয়ে দিতে? আমি যদি চেঁচিয়ে এখন লোক ডাকি? বলি তুমি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসব করছ। আমাকে জোড় করে রেপ করছ তুমি।
বিশ্বাস কর আমার তখন মনে হচ্ছিল সজোড়ে একটা চড় মারি ওর গালে। তারপর যা হয় দেখা যাবে। কিন্তু কেন জানি না ও আমাকে দ্বিতীয়বারের জন্য আবার ছল করল আমার সাথে। আমাকে বলল-বিশ্বাস কর, আমি শুধু আজকের দিনটা চাইছি তোমার কাছে। আর কোনদিন বলব না। প্লীজ।
আমার ঠোটে তখন ও ঘনঘন চুমু খেয়ে চলেছে। আমি সেই দৃশ্য ভেতর থেকে মেনে নিতে পারছি না। শুধু ভাবছি, ক্ষনিকের অস্বস্তি। কিন্তু এটা থেকে যদি চিরকালের স্বস্তি পাওয়া যায় তাহলেই আমার মুক্তি।
আমার শরীরটা শামুকের মতন গুটিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ও তবু কসুর করছিল না আমাকে জাগিয়ে তুলতে। প্রাক সহবাসের সবরকম কলাকৌশল ও নিজেই প্রয়োগ করতে শুরু করল আমার সাথে। নিজের হাতে ও আমাকে বিবস্ত্র করতে শুরু করল। ওর কামক্ষুধার তাড়না দেখে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। আমি উলঙ্গ। ও নিজের জিভটা কয়েক মূহূর্তের জন্য নিজের ঠোটের উপর বুলিয়ে নিল। চকচকে ভিজে ভিজে ঠোটে যেন পৃথিবীর সমস্ত কামনা আগুনের মতন ঝলসে উঠছে।
বিশ্বাস কর দীপঙ্কর আমি কিন্তু এটা চাই নি। শুধু এটাই বুঝতে পারছিলাম। তিনমাসে যে সুখ তুমি তোমার বউকে দিতে পারো নি। সেটাই ও পুষিয়ে নিতে চাইছে আমার কাছ থেকে। ও আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকে পেটে চুমু খাচ্ছিল। আমি চেষ্টা করছিলাম নিজেকে নিশ্চল রাখার। ও বলপ্রয়োগে আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চাইছে। আমি চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব ওর কামনায় সাড়া না দেওয়ার। হঠাৎ অতর্কিত আক্রমণে ও আমাকে নীচে শুইয়ে দিল এবারে। আমি কি করব বুঝে না উঠতেই আমার বুকের উপর ভার রাখল দামিনী। যেন আমার ইচ্ছা আর অনিচ্ছার উপর আর নির্ভর করবে না ও। আমাকে চুমু দিয়ে রক্তবর্ণ করে দিচ্ছিল আমার ঠোটটাকে। উদাম হয়ে আমাকে নীচে শুইয়ে রেখে আমার দুদিকে পা ছড়িয়ে বসল দামিনী। প্রায় আধঘন্টা ধরে বিপরীত বিহারে তৃপ্ত করল নিজেকে।
আমার সঙ্গে অতক্ষণ ধরে যুদ্ধ করেও আঁশ মেটেনি তোমার বউয়ের। আমাকে ছাড়তেই চাইছিল না। নগ্ন শরীরটাকে আমার শরীরের সাথে লেপ্টে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকল বেশ কিছুক্ষণ। ও ঠোটের চুমু দিয়ে আমার ঠোটটাকে আঁকড়ে ধরছিল বারবার। আমি শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই রেহাই চাইলাম ওর কাছে। -এবার আমাকে ছাড়ো। ঘরে ফিরতে হবে আমাকে। ওর মুখে কেমন একটা শয়তানি হাসি। আমার সমস্ত চিন্তাধারাকে ঘেন্নার দিকে নিয়ে ফেলছিল। ওর প্রতি একটা বিদ্বেষ আসছিল। আমার অসহায় মূহূর্তটাকে কাজে লাগালো দামিনী। তবুও নিজেকে সংযত করে বললাম-আমি বুঝতে পারছি। তোমার ভিতরটা হাহা করছিল এতদিন। তাই বলে এটা তুমি করলে। তুমি দীপঙ্করের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে। কাজটা তুমি ঠিক করলে না দামিনী। আমার বন্ধুকে আমি ঠকালাম। নিজের বিবেকের কাছে কোনদিন উত্তর দিতে পারব?
দামিনীর যেন কোন হেলদোল নেই। ও আমাকে নির্লজ্জ্বের মতন বলল-এখনকার দিনে এসব চলে না। সবাই এখন যে যার মতন চলে। আমার স্বামী আমাকে করে না। ও কোথায় কি করে বেড়ায় আমি দেখতে যাই?
এবার আমি রেগে গিয়ে চড় মারলাম ওকে। কিন্তু আশ্বর্য আমার চড় খেয়ে ও কিন্তু রাগল না। বরং আমার কাছে এসে বলল আমাকে-আবার চড় মারো আমাকে। দেখ আমি কি করি?
রেগে গিয়ে বললাম-কি করবে আমাকে?
ও হঠাৎ আমার মুখটা ওর নগ্ন বুকে চেপে ধরল। এবার পাগলের মতন মুখ নীচু করে চুমু খেতে লাগল আমার কপালে গালে মুখে। বারবার একই কথা বলতে লাগল-আমি ভালবাসি তোমাকে। যাকে ভালবাসি তাকে কি করে আঘাত দিই। আমি তোমার চড় খেতে রাজী আছি। প্লীজ একটু আদর কর আমাকে।
তুমি নিশ্চই বুঝতে পারছো দীপঙ্কর। ঐ মূহূর্তে আমার অবস্থাটা কি রকম। একবার মনে হোল তোমার বউ নিশ্চই মানসিক রোগী। নইলে এরকম একটা কান্ড ঘটায় কি করে? আমাকে হতবাক করে দিয়ে ও এবার শেষ অস্ত্রটা ছাড়ল। আমাকে করুন স্বরে বলল-আমিই শুধু খারাপ? আর বাকীরা ভাল? সত্যি কথা বললাম, তোমার বিশ্বাস হোল না। বলতে বলতে ও ছল করে কাঁদতে শুরু করল আমার সামনে। আমি বললাম-কি হয়েছেটাকি বলবে তো?
দামিনী বলল-তুমি যদি বিশ্বাস না কর আমার কিছু করার নেই। আমি কারুর বিশ্বাস ভঙ্গ করিনি। করেছে তোমার বন্ধু আর তোমার বউ।
আমি চোখ বড় বড় করে বললাম-মানে?
ও বলল-না থাক আমি বলব না। তুমি বাড়ী যাও।
আমার তখন জেদ চেপে গেছে। ওকে বললাম-বলতেই হবে তোমাকে। কি হয়েছে বল?
ও বলল-বলছি না বাড়ী যাও।
এবার আমি ওর চুলের মুঠিটা চেপে ধরলাম। বল বলছি। আমাকে অন্ধকারে ফেল না। দামিনী আমার সমস্ত আশাটাকে চূর্ণ করে দিয়ে এবার বলল-আমি জানতাম না তুমি এটা জানো না। ওর সাথে তোমার বউ এর রোজ ফোনে কথা হয়। দীপঙ্কর তোমার বউকে ভালবাসে। আমি দেখেছি ওর ফোনে তোমার বউকে পাঠানো লাভ মেসেজ।
আমার ভেতরটা তখন শক্ত পাথরের মতন হয়ে যাচ্ছে। তীব্র চিৎকারে ওকে বললাম-কি বলছ তুমি? এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?
নিজের জামাকাপড়টা আবার গায়ে জড়াতে জড়াতে ও বলল-আমি তো আগেই বলেছি বিশ্বাস কোর না। আমার কিছু যায় আসে না।
বলতে পারো একপ্রকার বাজীমাত করল দামিনী। নিমেষের মধ্যে আমার চিন্তাধারাকে পুরো বিপরীত দিকে ঠেলে দিল ও। আমি এই প্রথম তোমাকে আর রেখাকে অবিশ্বাস করতে শুরু করলাম। ঘরে ফিরে এলাম তারপরে। সারারাত এপাশ ওপাশ করলাম। রেখার সাথে ভাল করে কথাই বলতে পারলাম না। বার বার একটা চিন্তাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। কারন আমার মনে তো তখন বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছে দামিনী।
আমি সারারাত ঘুমোতে পারলাম না। খুব ভোর রাত্রিতে বিছানা ছেড়ে গুটি গুটি পায়ে বেরিয়ে গেলাম ফ্ল্যাট ছেড়ে। রেখা টের পেল না। ও তখন ঘুমোচ্ছে। আমি বাইরে থেকে তালাটা আসতে করে লাগিয়ে বেরিয়ে গেলাম। যাতে আবার ফিরে এসে তালা খুলে ঢুকতে পারি। ভোর রাতে তোমার আর দামিনীর ফ্ল্যাটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। কেউ যেন আমাকে নিশিডাকের মতন টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি আসতে করে বাইরে থেকে ডাক দিলাম-দামিনী এই দামিনী। ও দরজাটা খুলল একটু পরে। আমি কথা বলতে পারছি না। আমার সামনে তখন নাইটি পড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে দামিনী। দরজাটা বন্ধ করেই আমাকে জড়িয়ে ধরল দামিনী। এবার ওর গভীর চুম্বন আঁকড়ে ধরল আমার ঠোটদুটোকে। পাগলের মতন আমার ঠোটদুটোকে চুষতে চুষতে বলল-বুঝতে পেরেছ আমাকে। আমি তোমাকে সত্যি বলেছি কিনা? আর কখনও রাগ করবে আমার উপর?
কি হোল জানি না। শুধু এইটুকু বুঝলাম। রেখা আর তোমার প্রতি অবিশ্বাস এবার প্রবলভাবে দামিনীর প্রতি আকৃষ্ট করেছে আমাকে। ওর চুম্বনে আমি গভীর ভাবে সাড়া দিতে লাগলাম।
দীপঙ্কর নিজের নির্বুদ্ধিতায় নিজেরই অবিশ্বাসে আমি কি যে করলাম আমি নিজেই জানি না। স্বয়ং ভগবানও আমাকে ক্ষমা করবেন না আমি জানি। আমি তোমাদেরও ক্ষমা কোনদিন পাব না এটাও জানি। দামিনী আমাকে বলল-চল আমরা পালিয়ে যাই এখান থেকে। ওকে বললাম-কোথায় যাবে?
ও বলল-তোমার গাড়ী আছে না? চল আমরা গাড়ী চড়ে কোথাও চলে যাই। ওকে বললাম-বেশ। কখন যাবে? ও বলল-কেন আজকেই। আমি রেডী হয়ে নিচ্ছি। তুমি অফিসের নাম করে বেরিয়ে এস। যেন আমাকে তখন নিজের মতন চালনা করতে শুরু করে দিয়েছে দামিনী। ও যা বলছে আমি তাতেই হ্যাঁ বলছি।
রেখাকে মিথ্যে কথা বলে আমি বেরিয়ে এলাম। ইস ওর জন্য সত্যি খারাপ লাগছে। দামিনী আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল। ওকে নিয়ে নিমেষে এলাকা ছেড়ে চলে গেলাম অনেক দূরে। জায়গাটা সুন্দর। এখন আমি এখানেই আছি। আর হয়তো কিছুক্ষণ। চারিদিকে সুন্দর গাছ গাছড়া। মাঝখানে একটা হোটেল। মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য। গত দুদিন ধরে আমি দামিনীকে এখানে প্রবল ভাবে ভোগ করেছি। ওর শরীরে নিজেকে আবদ্ধ করেছি একবার নয় বহূবার। নিজেকে বিলিয়ে দিতে আমার কাছে একটুর জন্যও কার্পণ্য করেনি ও। রাগে দূঃখে করেছি। হয়তো তোমাদের উপর প্রতিশোধ নিতে বারে বারে ওর শরীরের মধ্যে প্রবিষ্ট হয়েছি। আমার অবুঝ মন বারে বারে এই ভোগবাসনা চরিতার্থ করতে বাধ্য করেছে আমায়। তোমার সুরভিত উদ্যান আমি ছিড়ে খুড়ে খেয়েছি দীপঙ্কর। আমায় ক্ষমা কোরো। জানি আমি অন্যায় করেছি। সেইজন্যই নিজের রাগ আর ক্রোধকেও আমি চেপে রাখতে পারেনি। দামিনীকে আমি নিজের হাতে খুন করেছি। হ্যাঁ খুন। ওর অসাঢ় মৃতদেহটা এখন পড়ে আছে আমার সামনে। একটু আগে গলা টিপে ওকে আমি হত্যা করেছি। জানি তুমি জিজ্ঞেস করবে কেন? ঐ যে বললাম ছলনা করে আমার মনটাকে জয় করতে চেয়েছিল তোমার বউ। ভাবতেই পারেনি আমি ওকে খুন করব। বোকার মতন বলে ফেলেছিল আমাকে। ভেবেছিল আমি তো কোনদিন আর রেখার কাছে ফিরে যেতে পারব না তাই। মিথ্যেটাকে কেমন সত্যি করে বানিয়ে বানিয়ে বলেছিল ও। সেটাই রসিয়ে রসিয়ে বলছিল। আর হাঁসছিল, তোমাকে কেমন বোকা বানিয়েছি। এবার বল এটা না করলে আমাকে পেতে তুমি?
সত্যি বলছি দীপঙ্কর। আমার হাতদুটো তখনও ওর গলাটাকে ছাড়ছিল না। দামিনীর প্রাণটা তার আগেই বেরিয়ে গেছে। আমি যেন একবার নয় বার বার মারতে চাইছিলাম ওকে।
নিজেকে কোনদিন ক্ষমা করতে আর পারব না। একটু পরে পুলিশ আসবে। তার আগেই আমাকে যা করার করতে হবে। দূঃখের কথাটা একটাই। বেঁচে থাকার সব আকর্ষনই হারিয়ে গেল। আত্মহনন ছাড়া আমার এখন আর কোন গতি নেই। আমার মৃত্যুতে কেউ কষ্ট পাবে না ঠিকই। কিন্তু শান্তির পথ খুঁজতে এছাড়া আমার আর কোন গতি নেই। যাবার আগে একটা কথাই বলে যেতে চাই। পারলে রেখাকে একটু দেখ। এখন তুমি ছাড়া ওকে দেখার কেউ নেই। তোমরা আমাকে ক্ষমা করো। আমি একজন ভালো স্বামী হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম কোথায়? বিদায়। -ইতি তোমাদের মৃত প্রসেনজিত।
পুলিশ এসে একঘন্টা পরে ওদের দুজনের ডেডবডিটা হোটেল থেকে উদ্ধার করে। কলকাতায় কাটাছেড়ার পরে নিয়ে এসেছিল। আমি শেষ দেখাটা আর দেখিনি। কিন্তু সেদিনের সেই চিঠিটার কথা আমার আজও মনে পড়ে। দেখতে দেখতে ১টা বছর পেরিয়ে গেছে। আমি ওকে ভুলিনি। প্রসেনজিত এর শেষ ইচ্ছা পূরণ করেছে দীপঙ্কর। আমি এখন ওর ঘরনী। ঐ আমাকে দেখছে, ভালবাসছে। আমাকে নতুন ভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে দীপঙ্কর। আগেও যে চেয়েছিল তাকে দিতে কসুর করিনি। এখন যে চেয়েছে তাকে দিতেও কসুর করিনি। তফাতটা শুধু এই। মধ্যিখানে চাওয়ার মানুষটা শুধু বদলে গেছে। আমার সুরভিত উদ্যান সুরক্ষিতই আছে।
No comments:
Post a Comment